গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ সাতদফা দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ
গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যা, বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, লুটপাট, ক্ষতিপূরণ ও জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ সাতদফা দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক সড়কের সাহেবগঞ্জ ইক্ষুখামার এলাকার কাটামোড় নামকস্থানে শনিবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে ঘন্টাব্যাপী এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরআগে উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের মাদারপুর জয়পুরপাড়া থেকে সহস্রাধিক নারী-পুরুষ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক সহ সাহেবগঞ্জ ইক্ষুখামারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশে অংশ নেয়।
সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদ, এএলআরডি ও জনউদ্যোগের যৌথ আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সহ সভাপতি রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাফুরুল ইসলাম, সহ সাধারণ সম্পাদক বার্নাবাস টুডু, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শেখ, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক সুফল হেমব্রম, কোষাধ্যক্ষ গনেশ মুরমু ও প্রচার সম্পাদক রাফায়েল হাজদা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। 
বক্তারা বলেন, সাঁওতালরা কি মানুষ নয়, নাকি তারা বাংলাদেশের নাগরিক নয়। যদি তারা এ দেশের নাগরিক হয়ে থাকে তাহলে হত্যাকান্ডের চার বছর পেরিয়ে যাচ্ছে কোন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছেনা কেন ? উল্টো সাঁওতালদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। তদন্তের নামে চার বছর অতিবাহিত হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা তদন্তের নামে কালক্ষেপন করে যাচ্ছে। কাউকে গ্রেপ্তার করছেনা। সাঁওতালদের নিয়ে এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। অনতিবিলম্বে সাঁওতালদের নামে যে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে তা প্রত্যাহার করে নিন। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে দিন। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করুন। বক্তারা আরও বলেন, সাঁওতাল হত্যা, বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, লুটপাট, ক্ষতিপূরণ ও জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ সাতদফা দাবী দ্রুত বাস্তবায়ন করুন। অন্যথায় সারা দেশে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ পুলিশ নিয়ে সাহেবগঞ্জ ইক্ষুখামারে আখ কাটতে যান। এসময় সাঁওতালরা বাপ-দাদার জমি দাবী করে আখ কাটতে বাঁধা দেন। এতে চিনিকল শ্রমিক, পুলিশ ও সাঁওতালদের ত্রিমুখি সংঘর্ষ হয়। পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিন সাঁওতাল। আহত হন উভয়পক্ষের প্রায় ৩০জন।

