হবিগঞ্জে নিষ্ঠুরতায় আবদ্ধ কলেজ ছাত্রীসহ তার দুই ভাই
আজিজুল হক সানু,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি;
হবিগঞ্জের বাহুবলের পুটিজুরীতে সৎ মায়ের নিষ্ঠুরতা ও অমানুষিক নির্যাতনের শিকার প্রবাসী আফতাব উদ্দিনের প্রথম স্ত্রীর মেয়ে সিলেট এমসি কলেজে অধ্যায়নরত মেধাবী ছাত্রী শামিমা আক্তার সহ তার দুই ছেলে সন্তান। পিতার বিশাল দালান ঘর থাকা সত্বেও খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হয়েছে।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হরিশচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত দুধা মিয়ার ছেলে ওমান প্রবাসী মোঃ আফতাব উদ্দিন প্রায় ২৫ বছর পূর্বে বিয়ে করেন নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩নং পানিউমন্দা ইউনিয়নের পানিউমন্দা গ্রামের মোছাঃ রহিমা খাতুনকে।বিয়ের পর আফতাব উদ্দিনের প্রথম স্ত্রী মোছাঃ রহিমা খাতুনের গর্ভে এক মেয়ে ও দুই ছেলে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু নারীলোভী আফতাব উদ্দিন বিভিন্ন নারীদের সঙ্গ নিয়ে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের কোন খোঁজখবর নেয়নি আফতাব উদ্দিন।
এর পর থেকে অনেক দুঃখ কষ্টে ছেলে মেয়ের ভরনপোষণ করেন রহিমা খাতুন। পরবর্তীতে মেয়ে ও ছেলেদের ভরনপোষণের দাবীতে পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি। একপর্যায়ে প্রথম স্ত্রী মোছাঃ রহিমা খাতুনের মামলায় স্বামী আফতাব উদ্দিনকে কারাগারে পাঠান বিজ্ঞ আদালত। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর স্ত্রী ও ছেলে মেয়ের ভরনপোষণের শর্তে আদালত থেকে জামিনে আসেন আফতাব উদ্দিন। এর কিছুদিন পর আফতাব উদ্দিন ওমান প্রবাসে চলে যান। চতুর চালাক আফতাব উদ্দিন প্রবাসে গিয়ে প্রথম স্ত্রী রহিমা খাতুন ও সন্তানদের ভুলে যান। দ্বিতীয় স্ত্রী মোছাঃ জমিলা খাতুনের নামে টাকা পয়সা পাঠান আফতাব উদ্দিন। এরমধ্যে আফতাব উদ্দিনের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়।
গত বছর আফতাব উদ্দিন প্রবাস থেকে দেশে আসার পর আবারও স্ত্রী সন্তানের ভরনপোষণের শর্তে আদালত থেকে জামিনে আসেন। আফতাব উদ্দিন পারিবারিক বিষয়াদি শেষ না করেই গোপনে প্রবাসে চলে যান। ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রথম স্ত্রীর বড় মেয়ে সিলেট এমসি কলেজের শিক্ষার্থী শামিমা আক্তার বাড়িতে আসলে সৎ মা জমিলা খাতুন ঘরটি তালাবদ্ধ করে বাবার বাড়ি উপজেলার স্বস্তিপুর গ্রামে চলে যান। শামীমা আক্তার ছোট দুই ভাই ফারহান ও হাসানকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করেন।
এ ঘটনায় পুটিজুরী এলাকায় আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হলে ঘরের তালা কলেজ ছাত্রী শামীমা ও তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নির্যাতিত পরিবারটি সু-বিচারের দাবীতে বার বার স্থানীয় মুরুব্বি ও থানা পুলিশের দারস্থ হয়েও বঞ্চিত হচ্ছে। বর্তমানে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে ভোক্তাভূগীরা দাবী করেন।

