স্ত্রীকে সারপ্রাইজ দেয়া হলো না সহকারী প্রকৌশলীর, প্রাণ গেল সড়ক দূর্ঘটনায়
লোটাস আহম্মেদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি;
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোজাহার আলী (২৮)। ডুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিএসসি শেষে চাকুরীতে যোগদান করেছেন গত ফেব্রুয়ারী মাসে।
গত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে করেছেন বিয়ে। শুক্রবার (১০ জুন) বিকেলে খবর পেয়েছেন নতুন করে তার চাকুরী চুড়ান্ত হয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তরে। গণপূর্তে চাকুরীর জন্য গত ৫ মাস আগে দিয়েছিলেন পরিক্ষা। মুঠো ফোনে স্ত্রীকে কল করে বলেছেন তোমাকে সারপ্রাইজ দিব। আমি বাড়িতে আসছি।
তবে স্ত্রীকে নতুন চাকুরীর সারপ্রাইজ দেওয়া হলো না তার। কর্মস্থল থেকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়িতে যাবার পথে মোটরসাইকেল-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন তিনি।
নিহত মোজাহার দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার বিনাইল ইউপির রানীনগর-তেগরা গ্রামের নজরুল মন্ডলের ছেলে।
শুক্রবার সন্ধা ৭টায় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের হিলি মোড় এলাকায় এই দূর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় পিকআপটি রাস্তার পাশে জমিতে উল্টে যায় এবং পিকআপটির ড্রাইভার সহ গাড়িটিতে থাকা ১৭ জন আহত হয়। পরে আশংকাজনক অবস্থায় ৩ জনকে রংপুর ও দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক।
আহত ১৭ জনই দিনাজপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা। তারা পিকআপটিতে চড়ে গাইবান্ধায় একটি অটো রাইস মিলে কাজ করার জন্য যাচ্ছিল। শুক্রবার মধ্যরাতে নিহত মোজাহার আলীর ভাই মজিদুল মন্ডল বাদী হয়ে পিকআপটির চালক ও দুই হেলপারের বিরুদ্ধে ঘোড়াঘাট থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা করেছে।
নিহত মোজাহারের সহকর্মী রফিকুল ইসলাম। তিনিও উপ-সহকারী প্রকৌশলী।
রফিকুল বলেন, “মোজাহার ভাই খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। মাত্র কয়েকমাস আগে তিনি আমাদের অফিসে যোগদান করেছেন। গত বৃহম্পতিবারেও আমার সাথে সংসার জীবন নিয়ে অনেক হাসিঠাট্টা করলেন। তা এই অকাল মৃত্যু মেনে নেওয়ার মত নয়।”
মামলার বাদী এবং নিহতের ভাই মজিদুল মন্ডল বলেন, “মাত্র কিছুদিন আগেই চাকুরী ও বিয়ে করেছে আমার ভাই। জীবনে সুখের দিন আসার আগেই তাকে চলে যেতে হলো। গণপূর্তে চাকুরীর পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর তাকে আমি নিষেধ করেছিলাম এলজিইডির চাকুরী না ছাড়তে। সেই গণপূর্তের চাকুরীর খবর দিতে বাড়িতে যাওয়াটাই কাল হলো আমার ভাইয়ের।”
