ঘোড়াঘাটের বাজারে আগাম লাল টসটসে লিচু, দাম হাতের নাগালে

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৩:০৫ PM, ১০ মে ২০২২

Spread the love

লোটাস আহম্মেদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি;

বাংলা মাস বৈশাখ বিদায়ের পালা, আসছে মধু মাস জ্যৈষ্ঠ। তবে মধু মাস আসার পূর্বেই লিচুর রাজ্য দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার বাজারে দেখা মিলেছে লাল টসটসে লিচু। স্বাদে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও, সৌন্দর্য্য নজর কেড়েছে ক্রেতাদের।

মঙ্গলবার (১০ মে) পৌর এলাকার বাসস্ট্যান্ড, আজাদমোড় ও পুরাতন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মোড়ে লিচুর পসরা সাজিয়ে বসে আছেন খুচরা বিক্রেতারা। অপর দিকে বাজারে আগাম লিচু দেখে ভিড় জমাচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। চলছে দরদাম ও লিচুর স্বাদ নিয়ে নানা মতামত।

এসব বাজারে মাদ্রাজি ও চায়না-৩ জাতের লিচু উঠেছে। প্রতি ১০০টি লিচু ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আগাম এসব লিচুর স্বাদ ও মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, বছরের নতুন ফল হিসেবে অনেকেই এসব লিচু কিনছেন। অনেকে আবার না কিনে ফিরেও যাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ঘোড়াঘাট উপজেলায় প্রায় ৬৩ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়। ছোট-বড় মিলিয়ে লিচুর বাগান রয়েছে প্রায় ১৬০টি। এসব বাগান থেকে বছরে লিচু উৎপাদন হয় প্রায় ৪৫২ মেট্রিক টন। অপরদিকে পুরো উপজেলায় লিচু চাষে জড়িত আছে প্রায় ৬৬০ জন চাষী। তারমধ্যে ১৬০ জন চাষী বাগান আকারে লিচুর চাষ করে। আর বাকি ৫০০ জন নিজ নিজ বাড়িতে লিচুর চাষ করে থাকেন।

ঘোড়াঘাট বাসস্ট্যান্ড থেকে ১২০ টাকায় ৫০টি লিচু কিনেছেন রিক্সা চালক যুবক আরিফ মিয়া। তিনি বলেন, “স্বাদ হয়ত খুব একটা ভালো হবে না। তবে বছরের নতুন ফল হিসেবে পরিবারের জন্য কিছু লিচু কিনলাম। মানুষকে বলতে তো পারব যে, বছরের নতুন ফলের স্বাদ আমি অন্য সবার আগে গ্রহণ করেছি।”

পুরাতন বাজারে একটি দোকানে লিচুর দরদাম করছিলেন স্কুল শিক্ষক মতিউর রহমান। কিন্তু তিনি লিচু না কিনেই ফিরে যাবার সময় বলেন, “এসব লিচুর অপরিপক্ক। লিচুর ভিতরে মাংস নেই বললেই চলে। শুধু বড়বড় বিচি আছে। টাকা দিয়ে এসব লিচু কেনা মানে বোকামি করা।”

বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কে.সি পাইলট স্কুলের একটি লিচুর বাগান ৩ বছরের জন্য লিজ নিয়েছেন রোকনু মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, “এ বছর লিচুর ফলন নেই বললেই চলে। আমরা যারা লিচুর চাষ করেছি, তাদের ফকির হওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।”

তিনি আরো বলেন, “ অগ্রিম লিচু পাকানোর জন্য আমি কোন রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করিনি। স্বাভাবিক ভাবেই কিছু কিছু গাছের লিচু লাল হয়েছে। চাহিদা থাকায় সেগুলোই আমি খোলা বাজারে বিক্রি করছি।”

এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, “ আর কয়েকদিন পরেই প্রায় সব জাতের লিচু পাকা শুরু হবে। মাটি ও আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন জাতের লিচু ইতিমধ্যে পুর্ণ পরিপক্ক হয়েছে। তবে কিছু চাষী অধিক মুনাফার আশায় রাসায়নিক প্রয়োগ করে অপরিপক্ক লিচুর রং পরিবর্তন করে বাজারে বিক্রি করছে।”

আপনার মতামত লিখুন :