পলাশবাড়ীত পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে অর্ধশত ছমিল

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:০৯ AM, ২৯ এপ্রিল ২০২২

Spread the love

পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ ছ’মিল। আর এ সকল অধিকাংশ ছ’মিলের নেই কোন বৈধ লাইসেন্স। ফলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে। সেই সঙ্গে উজাড় হচ্ছে পরিবেশের বন্ধু গাছ এবং সরকারও মোটা অংকের রাজস্ব থেকে হচ্ছে বঞ্চিত। এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকি ও যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে।

জানা গেছে, পলাশবাড়ী উপজেলার পৌরশহরসহ ৮টি ইউনিয়নের হাট-বাজার ও প্রত্যন্ত এলাকায় সব মিলে প্রায় অর্ধ শতাধিকের বেশি ছ’মিল রয়েছে। বেশীর ভাগ ছ’মিল স্থাপিত হয়েছে উপজেলার পৌরশহর, কিশোরগাড়ী, হোসেনপুর, বরিশাল, মহদীপুর, বেতকাপা, পবনাপুর, মনোহরপুর, হরিনাথপুর সহ বিভিন্ন হাট-বাজার সংলগ্ন এলাকায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ছ’মিল স্থাপনের ক্ষেত্রে বিধিমালায় বলা হয়েছে সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের ২০০ মিটারের মধ্যে এবং সরকারী বনভূমির সীমানা হতে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ছ’মিল স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া সকাল ৬টার পূর্বে এবং সন্ধা ৬টার পরে ছ’মিল চালানো যাবেনা এবং ছ’মিল চালানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, পলাশবাড়ীতে ছ’মিল চালানোর ক্ষেত্রে সরকারী সকল বিধি নিষেধ উপেক্ষিত হয়ে পড়েছে। বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকির অভাবে মহাসড়কের পাশে, আবাসিক স্থান, বাণিজ্যিক এলাকা, বিনোদন কেন্দ্র এলাকাতেও স্থাপিত হয়েছে এসব ছমিল। আর প্রতিনিয়ত এসব ছমিল গুলোতে অবাধে চলছে কাঠ কর্তন।

এদিকে নিয়ম বহির্ভূত যত্রতত্র এ সব ছমিল স্থাপনের কারণে বিভিন্ন স্থানে রাস্তার উপর কাঠের গুড়ি রাখা হচ্ছে এতে জনসাধারনের চলাচলের অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তার পাশে ও আবাসিক স্থানের ছ’মিল গুলো থেকে কাঠের গুড়ো উড়ে এসে আবাসস্থলে ঢুকে পড়ছে এবং পথচারীদের চোখে পড়ছে। এছাড়া সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার আগে-পরে ছমিল চালানো নিষেধ থাকলেও তা মানছেন না ছমিল মালিকরা। গভীর রাত পর্যন্ত এসব মিলে কাঠ ফাড়াই করা হচ্ছে। কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এসব ছ’মিলে অবৈধভাবে চোরাই কাঠও কাটা হচ্ছে। এতে শব্দদূষণসহ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। হুমকিতে পড়েছে জনস্বাস্থ্য।

সার্বিক এ পরিস্থিতিতে জনমনেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়া কি ভাবে চলে এসব ছমিল ? আর বিদ্যুৎ সংযোগই বা পায় কি ভাবে ?

লাইসেন্স না থাকার ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছমিল মালিকের সঙ্গে কথা হলে তারা তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, লাইসেন্স ছাড়াই তো চলছে। লাইসেন্স করার দরকার কি?

পলাশবাড়ী উপজেলার এক বন কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, আমার জানা মতে পলাশবাড়ীতে কোন ছমিলের বৈধ লাইসেন্স নেই। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে শৗঘ্রই ছমিল গুলোর ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা জেলা বন কর্মকর্তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খুব শীঘ্রই অবৈধ ছমিল বন্ধে অভিযান চালানো হবে।

আপনার মতামত লিখুন :