নাটোরের সিংড়ায় ইউপি নির্বাচনের ৯ দিন পর সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধার
নাটোর প্রতিনিধি;
নাটোরের সিংড়ায় ইউপি নির্বাচনের ৯ দিন পর সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে মরা নদীর কাছে পরিত্যাক্ত অবস্থায় এ ব্যালপ পেপার উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে ব্যালট পেপার চুরির অভিযোগ এনে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন চামারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী এজেন্ট মো. মাহামুদুল হোসেন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল আলম।
জানা গেছে, গত ২৬ ডিসেম্বর চামারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ৯দিন পর মঙ্গলবার সকাল ৯টায় গোটিয়া মহিষমারী ও বিলদহর মরা নদীর কিনারায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় বিপুল পরিমাণ সিল মারা ব্যালট পেপার দেখতে পায় এলাকাবাসী। এর আগে ৩ জানুয়ারি একই এলাকা থেকে বস্তা ভর্তি ব্যালট পেপার উদ্ধার করে শীত নিবারণ করেন স্থানীয় শিশু-কিশোররা। খবর পেয়ে পরিত্যাক্ত ব্যালট পেপারগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। উদ্ধারকৃত ব্যালট পেপারে দেখা যায়, চামারী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত মোটরসাইকেল ও নৌকা প্রতীকের সিল মারা রয়েছে।
এ বিষয়ে চামারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রশিদুল ইসলাম বলেন, শুনেছি ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। সেগুলো থানা পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। সুষ্ঠু তদন্তর জন্য আমার নির্বাচনী এজেন্ট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
পরাজিত মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী রবিউল করিম বলেন, নির্বাচনের দিন আমার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল। ওই দিন মহিষমারী, গোটিয়া, বিলদহর ও আনন্দনগর এই ৪টি কেন্দ্রে ফলাফল কারচুপি করা হয়েছে। আমাকে ষড়যন্ত্র করে পরাজিত করা হয়েছে। আর যে বিজয়ী হয়েছেন তার প্রাপ্ত ফলাফল গণনার আগেই ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিব।
সিংড়া থানার ওসি নুর-এ-আলম সিদ্দিকী বলেন, ব্যালট সাদৃশ্য কিছু কাগজ নিয়ে আসছি। সেগুলো শুকানো হচ্ছে। অনুমান করা হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০টি হতে পারে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কর্মকর্তা সেগুলো দেখে গেছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল আলম লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বস্তা ভর্তি ব্যালট পেপার উদ্ধার সঠিক নয়। আনুমানিক ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০টি ব্যালট পেপার উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। আর ব্যালটগুলো অধিকাংশ পানিতে ভেজা। তার মধ্যে ২-১টি শুকনো রয়েছে। ব্যালটে মারকিং সিল সমপরিমান নয়, আকারে ছোট। সহকারী প্রিজাইডিংয়ের স্বাক্ষর সঠিক নয় বলে মনে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ডিসেম্বর সিংড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে চামারী ইউনিয়নে আ’লীগের বিদ্রোহী (ঘোড়া প্রতীক) প্রার্থী হাবিবুর রহমান বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন নৌকা প্রতীকের রশিদুল ইসলাম ও মোটরসাইকেল প্রতীকের রবিউল করিম।

