নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৮:৪৮ AM, ১৯ জুলাই ২০২১

Spread the love

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে দরপত্রের শর্ত ভেঙ্গে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এতে করে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকার সচেতন মহল।

জানা গেছে, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে কামদিয়া জিসি থেকে বিরাট জিসি সড়ক নির্মাণের জন্য প্রায় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পেয়েছেন ম্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গাইবান্ধা কাজটি বাস্তবায়ন করবে। ওই কাজের টেন্ডার করা হয় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে। কাজ শুরু করা হয়েছে ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর। কাজ শেষ করার কথা ২০২১ সালের ৩১ মার্চে। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও ৫০ ভাগ কাজ শেষ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। অভিযোগ উঠেছে, ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ নিজেরা না করে চড়ামূল্যে বগুড়ার মেসার্স জাহিদ এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করেছে। প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করার পর থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

দরপত্রের চুক্তি অনুযায়ী, ১নং ইট ব্যবহারের কথা থাকলেও সেখানে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। বালুর ক্ষেত্রে ভালোমানের বালু ব্যবহার না করে স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা নিম্নমানের চিকন দানার বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া মালামাল সংগ্রহের জায়গায় ইট ভাংগার কথা। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি তা না করে বাহির হতে রাতের-আধারে নিম্নমানের ইটের খোয়া নিয়ে আসে। কোনো ক্ষেত্রেই দরপত্রের চুক্তি মানা হচ্ছে না। এতে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় নির্মাণকাজ কতটা টেকসই হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন এলাকার সতেতন মহল। এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী খায়রুল হাসান মাঝে মধ্যেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাইক্রোবাস ব্যবহার করে আসছে।

তরিকুল আলম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ঠিকাদারের লোকজন রাতের-আধারে খোয়া ও বালু নিয়ে আসে। অফিস থেকে কয়েকবার কাজ বন্ধ করেও দিয়েছিল। এরপরও ওই মালামাল দিয়েই কাজ করা হচ্ছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আপনারা জানেন নিজের বাড়ির কাজ করতে গেলেও শতভাগ কাজ করা সম্ভব হয়না। আমরা ১নং ইটের টাকা পরিশোধ করে থাকি। কিন্তু এরপরও ভাটা মালিকরা নি¤œমানের ইট দিয়ে থাকে। এ কারণে কয়েকটি ইটভাট পরিবর্তন করা হয়েছে। এরপরও আমরা বিষয়টি দেখছি।

নিম্নমানের কাজের বিষয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী খায়রুল হাসান বলেন, নির্মাণ সামগ্রী নিম্নমানের হওয়ায় আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। ঠিকাদাররী প্রতিষ্ঠানকে বার বার বলা শর্তেও রাতে তারা খোয়া এনেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাইক্রোবাস ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি হয়তো বা ঠিকাদারের লোকজনের সঙ্গে দুয়েকদিন গাড়ীতে যাতাযাত করেছি। প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ স্যার মাঝেমধ্যেই গাড়ীটি ব্যবহার করেছেন। আর আমার মনে হয় ওই গাড়িটি প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ স্যার ভাড়া নিয়েছেন কিনা।

জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, কিছু খোয়া সাইজে বড় হয়েছে আমি সেগুলো ভেঙে নিতে বলেছি। আর কাজ তো শতভাগ করা সম্ভব নয়। কাজের ক্ষেত্রে কিছু উনিশ/ বিশ হতেই পারে। কাজ তো শতভাগ করা সম্ভব নয়।

এলজিইডি গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান কবির বলেন, কাজ দেখভালের জন্য লোক পাঠিয়ে দিচ্ছি তার রির্পোটের উপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর উপজেলা প্রকৌশলী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাড়ী ব্যবহার করতে পারবেনা। বিষয়টি আমি জেনে ব্যবস্থা নিব।

আপনার মতামত লিখুন :