গোবিন্দগঞ্জে বালুখেকোদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৯:৫০ PM, ২৬ এপ্রিল ২০২১

Spread the love

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি; 

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চলছে বালু-মাটি লুটপাটের মহোৎসব। করতোয়া নদীর পাড় ও নদী তীরবর্তী এলাকার ফসলি জমির মাটি অবাধে কেটে নিয়ে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালী চক্র। এতে করে একদিকে যেমন জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুসংস্থানের ভারসাম্য হারাচ্ছে। অন্যদিকে ধ্বংস হচ্ছে বনায়ন, পরিবেশ, পরিবেশ হারাচ্ছে ভারসাম্য, হুমকীতে রয়েছে বেরি বাঁধ-সড়ক।

জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বুক চিড়ে বয়ে গেছে করতোয়া (কাটাখালী) নদী। আর এ নদীকে ঘিরে চলছে বালু উত্তোলন সহ নদী তীরবর্তী ফসলি জমির মাটি লুটপাটের মহোৎসব।

সরেজমিনে দেখা যায়, পৌরসভার বোয়ালিয়া, ফুলবাড়ী, বুজরুক বোয়ালিয়া (কাটাখালী), ধর্মপুর বাজার সংলগ্ন, সাপমারা ইউনিয়নের ফকিরগঞ্জ, নামা মেরী ও চক রহিমাপুর গুচ্ছগ্রাম এলাকা থেকে দীর্ঘদিন ধরে নদীর পাড় ও নদী তীরবর্তী এলাকার ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। ওই মাটি ভর্তি ভারী যানবাহন বেরি বাঁধে অবাধে চলাচল করছে। ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে দেবে গিয়ে হুমকীতে পড়ছে বেরি বাঁধ ও গ্রামীণ সড়ক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুজরুক বোয়ালিয়া (কাটাখালী) এলাকায় আনোয়ার হোসেন ও সাপমারা ইউপির নামা মেরী এলাকায় ইউপি সদস্য শাহ আলমের নেতৃত্বে, চক রহিমাপুর এলাকায় আশরাফুল ইসলাম, আলম ও এনামুল নামের লোকজন নদীর পাড় এবং নদী তীরবর্তী এলাকার মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে।

প্রশাসনের উদাসীনতায় দিনে-দুপুরে মাটি কেটে পরিবহন করা হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরে আসছেনা এসব কর্মকাণ্ড। এনিয়ে সতেচন মহলে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

শাহেদ নামের এক যুবক বলেন, চায়না কোম্পানিতে চাকরী করেন ইঞ্জিনিয়ার আল আমিন আমাদের ইনচার্জ। আমরা তার নির্দেশে এখানে কাজ করছি। কাজটি অবৈধ জানি। কিন্তু আমি তো তার নিয়ন্ত্রণে (আন্ডারে) কাজ করি।

সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে এই বাঁধ দেবে গিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এলাকার লোকজন বাধা দিলে তারা শোনে না। এলাকার লোকজন ইউএনও সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। কিন্তু কোন প্রতিকার মিলছেনা। বরং তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

অপর দিকে, ট্রাক চালক মোসলেম হোসেন বলেন, আমরা তো কোম্পানির চাকরী করি। এ কাজের সঙ্গে অনেকে জড়িত আছে। 

আশরাফুল ইসলাম বলেন, শুধু আমি কেন। এখানে আরো কয়েকজন এ কাজের সাথে জড়িত। তারা বন্ধ করলে আমিও বন্ধ করে দিব। 

ইউপি সদস্য শাহ আলম বলেন, সবাই আমাকে টার্গেট করে। আরও অনেকে এ ব্যবসার সাথে জড়িত। তারা বন্ধ করলে আমি নিজেও বন্ধ করে দিব।

এ বিষয়ে চায়না কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার আল আমিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যারা বালু, মাটি বিক্রি করছে আপনারা তাদের সাথে কথা বলুন।

জানতে চাইলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, আমরা এ বিষয়ে থানায় চিঠি দিয়েছি। তারা আমাদের সহযোগিতা করছেন না।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি একেএম মেহেদী হাসান বলেন, অনেক বড় বড় পত্রিকা আছে। আপনারা বড় করে লিখেন যে পুলিশ কোন কাজ করছে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ বলেন, আমাদের অভিযান পরিচালনা অব্যাহত আছে। এরপরও এসিল্যান্ডকে বালু জব্দ করার জন্য বলেছি। 

জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন বলেন, ইউএনওকে বলে দিয়েছি, অভিযান পরিচালনা করতে।

আপনার মতামত লিখুন :