প্রথম বারের মত ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনার ভ্যাকসিন প্রদান বুথ স্থাপন হলো ঘোড়াঘাটে
লোটাস আহম্মেদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি;
মহামারী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা প্রদান কার্যক্রম জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ব্যক্তিগত উদ্দ্যেগে সারা দেশে প্রথম বারের মত ইউনিয়ন ভিত্তিক বুথ স্থাপন করে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নুর নেওয়াজ আহম্মেদ।
শনিবার (৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি বুথের পাশাপাশি ঘোড়াঘাট উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য নতুন ৪টি বুথের উদ্বোধন করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নুর নেওয়াজ আহম্মেদ।
সরেজমিনে বুথ গুলো ঘুরে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের টিকা গ্রহণ করতে করতে ইচ্ছুক নাগরিকরা অনলাইনে নিবন্ধন করে বুথ গুলো থেকে টিকা গ্রহণ করছে। পাশাপাশি যারা নিবন্ধন করেনি। কিন্তু টিকা গ্রহণ করতে ইচ্ছুক, তাদেরকে অনস্পর্ট নিবন্ধন করে টিকা প্রদান করছে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা। এসব বুথে কোন ধরণের লাইনে না দাঁড়িয়েই এবং শতভাগ দুরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে টিকা গ্রহণ করতে পারছে সাধারণ নাগরিকরা। ফলে টিকা গ্রহণে জনভোগান্তি অনেকাংশ কমে গিয়েছে। এতে করে টিকা গ্রহণে আগ্রহ বাড়ছে সাধারণ নাগরিকদের মাঝে।
গত ফেব্রুয়ারী মাসের ৭ তারিখে সারা দেশের ন্যায় ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি বুথের মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম চালানে এই উপজেলার জন্য দুই ধাপে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ৩ হাজার ৯৬০ ডোজ ভ্যাকসিন। গত ২৭ মার্চ ভ্যাকসিন শেষ হয়ে যাওয়ায় এবং নতুন করে ভ্যাকসিন বরাদ্দ না দেওয়ায় টিকা প্রদান কার্যক্রম স্থগিত হয়ে পড়ে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে গত বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) আরো ৩০০ ডোজ ভ্যাকসিন বরাদ্দ দেয় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে থেকে নতুন করে ভ্যাকসিনের চাহিদা চেয়েছে দিনাজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়।
ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নুর নেওয়াজ আহম্মেদ বলেন, ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমের শুরু থেকে আমরা কেবল মাত্র একটি বুথের মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রদান করে এসেছি। যার কারণে আমাদের এই উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করা নাগরিকরা ইচ্ছা থাকলেও এত দুরে এসে ভ্যাকসিন গ্রহণে কিছুটা অনীহা ছিল। তবে তাদের সেই অনীহা দুর করতে এবং ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছিয়ে দিতে আমি ব্যক্তিগত ভাবে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা প্রদান বুথ স্থাপন করেছি এবং সাধারণ মানুষের কাছে থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, করোনা সংক্রমন প্রতিদিন বেড়ে চলছে। একটি বুথে শত শত লোক ভ্যাকসিন গ্রহণ আসলে, অনেক সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা কষ্টকর হয়ে যেত। তবে ইউনিয়ন ভিত্তিক বুথ স্থাপন করায় স্বাস্থ্যবিধি প্রায় শতভাগ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। টিকা প্রদানের শুরুর দিকে প্রতিদিন গড়ে শতাধিকের অধিক ব্যক্তি আমাদের বুথ থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। বর্তমানে সে হার মাত্র ৩০ থেকে ৪০ জন। ইউনিয়ন পর্যায়ে বুথ স্থাপন করায় টিকা গ্রহণ হার আগামী দিনে আরো বাড়বে।

