বাদী বললেন, মারামারি হয়নি; তবুও পুলিশ নিল মামলা

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০১:৫৮ PM, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১

Spread the love

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কোন ঘটনা ছাড়াই মিথ্যা মামলা নিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারী) গোবিন্দগঞ্জ থানায় ২৪ নং মামলা হয়। এরআগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মারামারির ঘটনা দেখিয়ে থানায় ১৬ নং একটি মামলা নেয় পুলিশ।

শাকিরুল মন্ডল জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারী প্রতিপক্ষ রশিদুল ইসলাম ও তার লোকজন সঙ্গে পুলিশ নিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করে। এতে গ্রামবাসী বাধা দিলে পুলিশ সহ তারা ফিরে যায়। এরপর রশিদুল ইসলামের শ্যালক মেহেরুল ইসলাম বাদী হয়ে ওইদিন আমাকে সহ ৭জনকে আসামী করে থানায় মামলা করে। পরদিন পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে। কোন ঘটনা ছাড়াই আবারো ৯ ফেব্রুয়ারী প্রতিপক্ষ রশিদুল ইসলামের ভাই জহুরুল ইসলাম দুলা বাদী হয়ে একই ঘটনা দেখিয়ে আমাকে সহ ৯জনকে আসামী করে থানায় মিথ্যা মামলা করে। তিনি আরও বলেন, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তিতে আমরা ধান রোপন করি। সেখানে কোন মারামারির ঘটনা ঘটেনি। অথচ আমাদের নামে মিথ্যা মামলা নেওয়া হয়। প্রতিপক্ষ রশিদুল ইসলাম প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশের সহযোগিতায় আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।

রশিদুল ইসলাম সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের সচিবালয়ে উচ্চমান সহকারী পদে চাকরী করেন। এরই প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে পুলিশ তার পক্ষ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা এ বিষয়ে প্রশাসনের উচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা এর প্রতিকার চাই।

মামলার বাদী জহুরুল ইসলাম দুলা বলেন, আমরা গত ৫ ফেব্রুয়ারীর ঘটনার পর আর জমিতে যাইনি। আমরা তাদের বিরুদ্ধে এরআগেও একটি মামলা করেছি।

থানার এসআই আলাউদ্দিন বলেন, মামলা নেওয়ার দায়িত্ব তো আমার না। আমাকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে, আমি তদন্ত করে কি রিপোর্ট দেই সেটি আপনারা দেখেন।

জানতে চাইলে থানার ওসি একেএম মেহেদী হাসান বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তদন্তের পর মামলাটি রেকর্ড করা হলোনা কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি ফোনটি কেটে দেন।

উল্লেখ্য, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের কামারদহ সোনারপাড়া গ্রামের মৃত নঈম উদ্দিনের ছেলে জবেদ আলী ও মেহেদুল ইসলামের সাথে পার্শ্ববর্তী ব্যাপারিপাড়ার বাসিন্দা ছামছুল হক সরকারের ছেলে রশিদুল ইসলামের দীর্ঘদিন ধরে ৭০ শতাংশ জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে মামলা করেন জবেদ আলী। অন্যদিকে, রশিদুল ইসলামের স্ত্রী শিরিনা আক্তার ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে অনুপ্রবেশ ও দখলের চেষ্টার অভিযোগ এনে এডিএম কোর্টে ১৪৪/৪৫ ধারায় ২৫৪/২০১৯ পিটিশন মামলা করেন। ৬০ দিন পর ওই পিটিশন মামলা অকার্যকর হয়। ওই জমিতে জবেদ আলী ও মেহেদুল ইসলাম কয়েকদিন আগে ধান রোপন করেন।

এরই একপর্যায়ে শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারী) প্রতিপক্ষ রশিদুল ইসলাম ও তার লোকজন পুলিশের সহযোগিতায় বিরোধপূর্ণ জমি দখলের চেষ্টা করে। এসময় গ্রামবাসীর বাধার মুখে পুলিশ ঘটনাস্থল (জমি) থেকে ফিরে আসে। উক্ত ঘটনায় রশিদুল ইসলামের শ্যালক মেহেরুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের লোকজনকে মারধরের অভিযোগে জবেদ আলী, মেহেদুল ইসলাম ও ব্যবসায়ী ফয়জুল ইসলাম সহ ৭জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর শাকিরুল মন্ডল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আপনার মতামত লিখুন :