বাড়িতে পৌঁছেছে শান্তি মিশনে শহীদ সবুজ মিয়ার মরদেহ : দাফন সম্পন্ন

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৬:০৮ PM, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

Spread the love

গাইবান্ধা প্রতিনিধি;

সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘের (ইউএন) শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় শহীদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষী সবুজ মিয়ার মরদেহ তার নিজ বাড়িতে পৌঁছেছে। প্রিয় মানুষটিকে শেষ বিদায় জানাতে গ্রামের বাড়িতে জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্বজনরা।

রোববার দুপুরে সেনাবাহিনীর বহনকারী হেলিকপ্টারে সবুজ মিয়ার মরদেহ গাইবান্ধার তুলসীঘাট হেলিপ্যাডে আনা হয়। পরে সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে মরদেহ পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের আমলাগাছি (ছোট ভবনপুর) গ্রামে তার নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়। মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। সবুজ মিয়া আমলাগাছি (ছোট ভবনপুর) গ্রামের মৃত হাবিদুল ইসলামের ছেলে। ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়ে জীবনের কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়েই তিনি বড় হন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত অবস্থায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই এই সাহসী সেনাসদস্য জীবন দেন। মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর এক নজর দেখার জন্য ভিড় করেন আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী। বাড়ির আঙিনায় আহাজারিতে ভেঙে পড়েন তার মা ছকিনা বেগম। বারবার তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এদিকে নিহতের স্ত্রী, উচ্চ মাধ্যমিক শেষ বর্ষের ছাত্রী নূপুর আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, বিয়ের মাত্র এক বছর আট মাসের মাথায় স্বামীকে হারালাম। সব স্বপ্ন এক মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেল। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী গ্রামের বাড়িতেই গার্ড অব অনার ও রাষ্ট্রীয় সম্মাননা শেষে সবুজ মিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাকে তার বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে। এ উপলক্ষে গ্রামে সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

 এর আগে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সুদানের আবেই অঞ্চলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত হন এবং আটজন আহত হন। সবুজ মিয়া সেখানে লন্ড্রি কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। রংপুর সেনানিবাসের ক্যাপ্টেন মো. আলভী বলেন, শহীদ সবুজ মিয়ার জানাজা ও দাফন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে সম্পন্ন করা হবে। শান্তিরক্ষার মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ দেওয়া এই সন্তানের জন্য গর্বিত হলেও, সন্তান হারানোর গভীর শোকে আজ নিথর হয়ে আছে একটি পরিবার, একটি গ্রাম।

আপনার মতামত লিখুন :