গোবিন্দগঞ্জে বালু সিন্ডিকেটের সাথে উপজেলা প্রশাসনের যোগসাজশের অভিযোগ

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৪:৫২ PM, ২২ নভেম্বর ২০২০

Spread the love

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বালু খেকোদের সাথে উপজেলা প্রশাসনের যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে বালু খেকোদের দৌরাত্ম বৃদ্ধি পেয়েছে।

জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীর বিভিন্নপয়েন্ট থেকে দীর্ঘদিন থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করে আসছে বালুখেকোর দল। যত্রতত্র অবাধে বালু তোলার কারণে নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী লোকজনের বসতবাড়ি ও আবাদি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গ্রামীণ সড়কে এসব নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচলের কারণে খানা-খন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। ভুক্তভোগিদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসনের উদাসীনতায় তা থেকে প্রতিকার পাচ্ছেনা ভুক্তভোগিরা। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো কিছু অভিযান করে থাকেন উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের চক রহিমাপুর উত্তরপাড়া এলাকায় তাহের, মিঠু, শামীম, মোস্তফা, শহিদুল এবং সাহেবগঞ্জ নামা মেরী এলাকায় মতলু, সামাদ ও শাহ আলম মেম্বারের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বোয়ালিয়া এলাকায় প্রিন্স মন্ডল, সবুজ ও রাসেল সহ আরও কয়েকজন। অপরদিকে, গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের কাইয়াগঞ্জে দিলীপ, মোকছেদ সহ কয়েকজন। পৌরশহরের খলসি মিয়াপাড়া একই এলাকায় তুষার সহ কয়েকজন একটানা বালু উত্তোলন করে আসছে। সেখানে গত প্রায় ১০ বছরেও কোন অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। তালুককানুপুর ইউনিয়নের সমসপাড়া এলাকায় শাহারুল ইসলাম ডিপটি ও বাবু মিয়া। তাজপুর এলাকায় মোস্তাফিজুর রহমান ও চন্ডিপুর এলাকায় আলম মিয়া। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বালু উত্তোলন অব্যাহত আছে।

চক রহিমাপুর এলাকার বালু ব্যবসায়ী মিঠু মিয়া জানান, আমরা উপজেলা প্রশাসনকে মাসোহারা দিয়ে থাকি। যে কারণে অভিযানে আসার আগে আমরা খবর পেয়ে থাকি। আপনারা তো কিছু করতে পারবেন না।

উপজেলার সাপমারা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শামিম রেজা মন্টু আক্ষেপ করে বলেন, এ ব্যাপারে আমি একাধিকবার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু আজও তার প্রতিকার মেলেনি। তিনি আরও বলেন, বালু খেকোরা চোর পুলিশ খেলছে। তবে তার অভিযোগের তীর উপজেলা প্রশাসনের দিকে।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মন বলেন, এনিয়ে অনেকে অনেক কথা বলতে পারে। বালু উত্তোলন বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। অভিযানে যাওয়ার আগেই বালু খেকোরা খবর পেয়ে যায় কিভাবে ? জবাবে তিনি বলেন, তাদের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় সেট করা আছে। ফলে তারা দ্রুত সংবাদ পেয়ে মেশিনগুলো সরিয়ে ফেলছে। তবে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বালু তোলা বন্ধ করবেন বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি অপর প্রান্ত থেকে ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলা হলে এলাকায় কি পরিমান ক্ষতি হয়। এনিয়ে বিভিন্ন লােক আমাকে ফােন করেছে, তিনি বলেন কয়েকদিন ধরে লক্ষ করে আসছি বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের কোন তৎপরতা নেই। বিষয়টি নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলব।

আপনার মতামত লিখুন :