কালীগঞ্জ পৌরশহরে যানবাহনের জটে নাকাল পৌরবাসী

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১২:৪২ PM, ০৩ ডিসেম্বর ২০২০

Spread the love

আহাম্মদ আলী, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি;

কালীগঞ্জ পৌর শহরের রাস্তার দুই পাশ যানবাহনের দখলে। বাসস্ট্যান্ডে যানবাহন রাখার পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা থাকলেও সেখানে যানবাহন রাখছে না পরিবহনে জড়িত সংশ্লিষ্টরা। যানবাহনের চালক, হেলপার এবং পরিবহন শ্রমিকদের উদাসীনতার কারণে প্রতিদিনই কালীগঞ্জ সরকারি হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তা হতে পুরাতন ব্যাংকের মোড় পর্যন্ত তীব্র যানজট লেগে থাকে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারী, যাত্রী ও সাধারণ জনগণ।
কয়েকজন পথচারী জানান, পৌর রাস্তার দুই পাশে লেগুনা, বাস, মাহিন্দ্র, ইজিবাইক ও অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনগুলো এলোমেলোভাবে রেখে যানজট সৃষ্টি করে থাকেন। এছাড়া পৌরসভা থেকে লিজ নিয়ে যারা বিভিন্ন যানবাহন হতে চাঁদা আদায় করে থাকেন তাদের দায়িত্বহীনতার জন্যও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
যানজটে ভোগান্তির শিকার কয়েকজন যাত্রী জানান, সকাল হতে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন কোম্পানীর পণ্যবাহী গাড়িগুলো রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে মালামাল নামানোর জন্যও যানজট লেগে থাকে। এছাড়া অপ্রাপ্ত বয়স্কর শিশু যাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যানবাহনের কোনো লাইসেন্স নেই তারা চালক হিসাবে বিভিন্ন যানবাহন চালিয়ে যাচ্ছে। নিয়মনীতি না জানা সেই সব যানবাহন চালকদের কারণেও যানজট সৃষ্টি হয়। যানজটের কারণে দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় আটকে পড়ায় তাদের সময় বিনষ্ট হচ্ছে। যানজট নিরসনের দায়িত্বে যারা রয়েছেন তাদের দায়িত্বহীনতার জন্য যানজটে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রী, পথচারী ও সাধারণ মানুষ।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে পৌর শহর ঘুরে দেখা যায়, কালীগঞ্জ থানা সংলগ্ন রাস্তার দক্ষিণ পাশে ইজিবাইকের চালকরা অস্থায়ী স্ট্যান্ড বানিয়ে যাত্রী উঠাচ্ছেন। কালীগঞ্জ বাজার বটতলা এলাকায় রাস্তার দুইপাশে এলোমেলোভাবে অটোরিকশা ও মাহিন্দ্র গাড়ি রেখে যাত্রীর জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন চালকরা। এর একটু পশ্চিমে এগিয়ে গেলে কালীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড। যানবাহন রাখার পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা রয়েছে বাসস্ট্যান্ডে। যানবাহন রাখার নির্ধারিত স্থানও রয়েছে সেখানে। কিন্তু যানবাহনের চালক ও হেলপাররা রাস্তার দুইপাশ দখলে রেখে তাদের গাড়িগুলো সেখানে রাখছেন। রাস্তাতেই তারা যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করেন এবং যাত্রী উঠা-নামা করে থাকেন। বাসস্ট্যান্ডের পথ ধরে সামনে এগিয়ে গেলে নতুন ও পুরাতন ব্যাংকের মোড়। সেখানে যানবাহন রাখার চিত্র একই। পরিবহন শ্রমিক ও চালকরা নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে যেখানে-সেখানে গাড়ি রেখে যাত্রী উঠান আর নামান। এতে প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পৌর রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে। অথচ পুরাতন ব্যাংকের মোড়, বাসস্ট্যান্ড ও বাজার বটতলা এলাকায় লিজকৃত পরিবহন থেকে চাঁদা তোলার দায়িত্বপ্রাপ্ত শ্রমিকরা পরিবহনের চাঁদা আদায় করে যাচ্ছেন। যানজট নিরসনে তাদের দায়িত্ব থাকলেও তারা শুধু পরিবহন চাঁদা আদায়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।
পরিবহন শ্রমিক, মালিক, চালক ও হেলপারদের এবং কালীগঞ্জ বাজার পরিচালনা কমিটির সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে পৌর শহরকে

যানজটমুক্ত করা যাচ্ছে না বলে অভিব্যক্ত করেন কালীগঞ্জ থানার ওসি একেএম মিজানুল হক। তিনি বলেন, যানজট নিরসনে পুলিশের পক্ষ থেকে মোবাইল টিম কাজ করে থাকেন। লেগুনা, বাস, মাহিন্দ্র, রিকশার চালকরা রাস্তাকে স্ট্যান্ড বানিয়ে রেখেছেন। তাই আমরা যদি পরিবহন শ্রমিক, মালিকদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করি তবেই পৌর শহরকে যানজট মুক্ত করা সম্ভব বলে আমি মনে করি।
আমরাও যানজটে ভোগান্তির শিকার বলে সত্যতা স্বীকার করেছেন কালীগঞ্জ পৌরসভার সচিব মোহাম্মদ মিলন মিয়া। তিনি বলেন, আমরা আন্তরিকভাবে চাই পৌর শহর যানজটমুক্ত হউক। এই ব্যাপারে যদি উপজেলা প্রশাসন মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা করেন তবেই জনসাধারণ যানজটের নাকাল থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শিবলী সাদিক বলেন, যাত্রী, পথচারী ও সাধারণ জনগণের সুবিধার্থে বাসস্ট্যান্ডে অবৈধভাবে গড়ে উঠা স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়। বাসস্ট্যান্ডে যানবাহন রাখার স্থান নির্ধারিত করে দেয়া হয়। পরিবহন শ্রমিক, মালিক, চালক ও হেলপার এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতার অভাবে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। পৌর শহরকে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

 

আপনার মতামত লিখুন :