১২ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় গোবিন্দগঞ্জ

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:৩৮ AM, ১২ ডিসেম্বর ২০২২

Spread the love

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;

১২ ডিসেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ হানাদার মুক্ত হয়। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের সমাপ্তি হয় এই দিন। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর ভোর রাতে মুক্তিকামী বাঙালি ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের উপজেলার কাটাখালি ব্রিজে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। মুক্তিকামী বাঙালিদের চতুরমুখী আক্রমণে দুই শতাধিক পাকহানাদার বাহিনী নিহত হয়।

পরদিন ১২ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয়েছিল গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা। বিজয়ের স্বাদ পান মুক্তিকামী ও সাধারণ মানুষ। বিজয়ের আনন্দ উল্লাসে মুক্তিকামী ও ছাত্র-জনতার সমাবেশে উড়ানো হয় লাল সবুজের পতাকা।

গোবিন্দগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে জানা যায়, ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় গণহত্যার খবর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে গোবিন্দগঞ্জে পৌঁছায়। এসময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে প্রতিহত করতে স্বাধীনতার পক্ষে জনতাকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠনকে নিয়ে সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের উপজেলার কাটাখালী সেতুটি ধ্বংস করে পাকিস্তানী বাহিনীর অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

এরই ধারাবাহিকতায়, ২৬ মার্চ সারারাত চলে প্রস্তুতি। ২৭ মার্চ সকালে শতশত মুক্তিকামী তরুণ, যুবক, ছাত্র জনতা কোদাল, শাবল, হাতুড়ি, খুন্তি ইত্যাদি নিয়ে ট্রাকে করে কাটাখালীতে জড়ো হতে থাকে। সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সেতু ধ্বংসের কাজ শুরু হয়। ব্রিজের উত্তর পাশের কিছু অংশ ভাঙার পর হঠাৎ করে রংপুরের দিক থেকে পাক বাহিনীর একটি কনভয় ছুঁটে আসে ব্রিজের নিকট। কনভয়টি পৌঁছেই এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে মুক্তিকামী বাঙালি জনতার উপর।

এ সময় দিশেহারা হয়ে অনেকেই ছুটে পালিয়ে যায়। এলোপাতাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন বাবলু মোহন্ত, আব্দুল মান্নান আকন্দ, আব্দুল মজিদ, হারেস, ফজলুল করিম, তোবারক আলী, আব্দুল কুদ্দুস, মনোয়ার হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, ফেরদৌস ও বাবু দত্ত সহ ১১ জন। আহত হন বেশ কিছু ছাত্র-জনতা।

তখন থেকে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১১ ডিসেম্বর ভোর রাতে হিলি, গাইবান্ধা এবং বোনারপাড়া ও মহিমাগঞ্জ থেকে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চতুরমখী আক্রমণে দুই শতাধিক পাকসেনা নিহত হয়। এসময় ভয়ে পালিয়ে যায় অন্য সেনারা। পরদিন ১২ ডিসেম্ব জয় বাংলা শ্লোগানে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ছাত্র-জনতা গোবিন্দগঞ্জ হাইস্কুল মাঠে সমবেত হয়ে লাল সবুজ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। হানাদার মুক্ত হয় গোবিন্দগঞ্জ।

প্রসঙ্গত, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠন ১২ ডিসেম্বর দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করে থাকেন।

আপনার মতামত লিখুন :