হবিগঞ্জে সাংবাদিক সাগরের পরিবার নিজ বাড়িতে ঢুকতে প্রতিবন্ধকতা
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :
দীর্ঘ ৪ বছর ধরে অন্যের বাড়িতে ভাড়ায় থেকে ১০ সদস্য পরিবার নিয়ে সাংবাদিক সাগর ও তার পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিচারের বাণী কি নীরবে নিভৃতে কাদেঁ, নাকি মনুষোত্ত হার মানবে পশু শক্তির কাছে ? নবীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মোঃ কবির মিয়ার কান্ড ও কুটিঁর জোর নিয়ে এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে। তিনি দীর্ঘ ৪ বছর ধরে সাংবাদিক সাগর এর পরিবার নিজ বসত ঘরে ঢুকতে পারছেন না। বাড়ীর রাস্তার প্রবেশ পথে বাশেঁর বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধিকতা সৃষ্টি করে রেখেছেন কাউন্সিলর।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক সাগর ও তার পরিবার সমাজপতি ও প্রশাসনের দরজায় দরজায় ধর্ণা দিয়েও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না। ফলে আটকে আছে সাগরের বাড়ীর নির্মাণ কাজও। শেষ পর্যন্ত নবীগঞ্জ থানার মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা ওসি মোঃ ডালিম আহমদ, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মিঠু,সাবেক প্যানেল মেয়র-১ এটি এম সালাম ও নবীগঞ্জ থানার বেশ কয়েকজন অফিসারসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় ওসি সাংবাদিক সাগরের পরিবারের প্রতিবন্ধিকতার বিষয়টি পরিলক্ষিত হলে তিনি সাগরের পরিবারকে মানবিক কারনে বসত ঘরে প্রবেশের রাস্তা অপসারনের জন্য কাউন্সিলরকে অনুরুধ করেন। এতে কাউন্সিলর দু’দিনের সময় নেন। কিন্তু সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও কাউন্সিলর কবির মিয়া সাগরের বাড়ীর প্রতিবন্ধিকতা রাস্তা খোলে দেন নি।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ পৌর এলাকার ছালামতপুর গ্রামের ছৈদ উল্লার ছেলে কাউন্সিলর কবির মিয়া এবং প্রতিবেশী মরহুম ছুরাব উল্লার পরিবারের সাথে বাড়ি সীমানা ও চলাচলের রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রায় ৫ বছর যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা মোকদ্দমা চলছে। প্রায় ৪ বছর পুর্বে মরহুম ছুরাব উল্লার ছেলে সাংবাদিক সাগরসহ তার পরিবারের লোকজন প্রভাবশালী কাউন্সিলর ও তার পরিবারের লোকজনের অত্যাচার ও নির্যাতনের কারনে বসত বাড়ীঘর পেলে এসে আত্মরক্ষা করেন। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে সাংবাদিক সাগরের পরিবার পরিজন বাসা ভাড়া করে বসবাস করে আসছেন। নিজ গৃহে পরবাসীর মতো অবস্থা সাগরের পরিবারের। নিজের বাড়ি ঘর থাকার পরও অন্যত্র বাসাভাড়া করে বসবাস করার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কাউন্সিলর কবির মিয়ার কুটিঁর জোর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে প্রায় ৪ বছর ধরে খালি বাড়িঘর থাকার সুবাধে ঘরের বাশঁপালাসহ মুল্যমান মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় কাউন্সিলরের লোকজন।
এছাড়া সম্প্রতি সাংবাদিক সাগরের পরিবার রাস্তার প্রতিবন্ধিকতা অপসারনের জন্য বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলার প্রেক্ষিতে প্রতিবন্ধিকতা অপসারনের জন্য ওসি নবীগঞ্জকে আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাস্তার সীমানায় দেয়া বেড়া সরিয়ে প্রতিবন্ধিকতা দুর করার জন্য কাউন্সিলরকে অনুরুধ করেন। এতে কাউন্সিলর কোন তোয়াক্ষা করেন নি। এক পর্যায়ে নবীগঞ্জ থানার মানবিক অফিসার ইনর্চাজ মোঃ ডালিম আহমদ সরজমিনে গিয়ে সাংবাদিক সাগর ও তার পরিবারের লোকজনকে তাদের বাড়িঘরে প্রবেশ করতে রাস্তার প্রতিবন্ধিকতা অপসারনের জন্য অনুরুধ করলে তিনি দু’ দিনের সময় নেন।
কিন্তু রির্পোট লেখা পর্যন্ত ৭ দিন অতিবাহিত হলেও কাউন্সিলর কবির মিয়া রাস্তার বেড়া অপসারন করেন নি। অভিযোগ উঠেছে উক্ত কাউন্সিলর সাংবাদিক সাগরের বাড়িঘর ও জায়গা জবর দখল করার পায়তারা করে আসছেন। এছাড়া উক্ত কাউন্সিলর কবির মিয়ার বাড়ির সামনে ও আশপাশে সরকারের কোটি টাকার ভুমি রয়েছে যা কাউন্সিলরের দখলে। সরকার অনুমতি ছাড়াই সরকারী কোটি টাকার সম্পত্তি জোরপুর্বক দখল করে ভোগ করে আসছেন।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক সাগর মিয়া বলেন, প্রায় ৭০/৮০ বছর তারা ওই বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। এই দীর্ঘ সময় যে সব রাস্তা দিয়ে তারা চলাচল করতো, প্রভাবশালী কাউন্সিলর কবির মিয়া তা বন্ধ করে দিয়েছেন।
কাউন্সিলর কবির মিয়া বলেন, সাংবাদিক সাগরদের বাড়িতে ঢুকতে দেয়া যাবে না। কারন তাদের রাস্তা নাই। দীর্ঘ প্রায় ৭০ বছর ধরে তারা ওই বাড়ি থেকে কি ভাবে চলাচল করতো প্রশ্ন করলে তিনি জবাব দিতে অনিহা প্রকাশ করেন।
নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ মোঃ ডালিম আহমদ বলেন, একজন জনপ্রতিনিধির কাছে যা আশা করেছিলাম, কাউন্সিলর কবির মিয়ার কাছে তা পাওয়া যায়নি। তিনি আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ারও কথা বলেন।

