সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৯:৫৯ AM, ২৬ অক্টোবর ২০২০

Spread the love

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চুক্তি ভঙ্গ করে সময়মত গ্রাহকের টাকা ফেরত না দিয়ে গ্রাহককে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে।

জীবন বীমা হলো দু’পক্ষের মধ্যে একটি আইন সম্মত চুক্তি। যা এক পক্ষ অন্য পক্ষকে ক্ষতিপূরণ দিবে বলে নিশ্চিয়তা দিয়ে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। জীবনের ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য বীমা-পলিসি করা হয়। কিন্তু চুক্তি ভঙ্গ করে নির্ধারিত সময়ে গ্রাহকের টাকা ফেরত না দিয়ে গ্রাহককে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে। চার বছর আগে বীমা-পলিসির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় প্রায় ১৪শ’ গ্রাহকের। আজও সেই গ্রাহকের প্রায় চার কোটি টাকা ফেরত দেয়নি কোম্পানি।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের তরফ কামাল গ্রামের মৃত বছির উদ্দিনের ছেলে মোঃ বদিউজ্জামান। জীবনের ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য ৫০ হাজার টাকা অংকে ১২ বছর মেয়াদী একটি বীমা-পলিসি করেন সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে। ২০০৫ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে কোম্পানিতে নিয়মিত মাসিক ৩৫০ টাকা হারে সঞ্চয় জমা দিয়েছেন তিনি। বীমা-পলিসি নং- ৮২০০০৩১৪৭-৬, গত ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিলে বীমা-পলিসির ১২ বছর মেয়াদ শেষ হয়।

একই ইউনিয়নের চকরহিমাপুর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী মোছাঃ ফাতেমা বেগম। তিনিও একই ভাবে ২০০৫ সালের ২৮ মে ২৫ হাজার টাকা অংকে ১৭৫ টাকা মাসিক হারে ১২ বছর মেয়াদী বীমা-পলিসি করেন সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে। পলিসি নং- ৮২০০০৩২৭৬-৯, বীমা-পলিসির মেয়াদ শেষ হয় ২০১৭ সালের ২৭ মে। কিন্তু সেই জমানো অর্থ অদ্যবধি ফেরত দেয়নি কোম্পানি।
চুক্তি অনুযায়ী পলিসির মেয়াদ উত্তীর্ণের ৯০ দিনের মধ্যে গ্রাহকের জমানো অর্থ ফেরত দেওয়ার কথা কোম্পানির। কিন্তু বীমা-পলিসির মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় চার বছর অতিবাহিত হলেও গ্রাহকের টাকা অদ্যবধি ফেরত দেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এমনই ভাবে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির গোবিন্দগঞ্জ জোন অফিসের আওতায় উপজেলার ১৪শ’ গ্রাহকের প্রায় চার কোটি টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি।

তানজিলা বেগম নামের এক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের পলিসির মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় চার বছর। কিন্তু অদ্যবধি টাকা ফেরত দেওয়ার কোনো নামই নেই। শুধু অফিসে ঘুরতে ঘুরতে হয়রানি হয়ে যাচ্ছি। আগের সঞ্চয়ের টাকাই এখনো ফেরত পায়নি। আবারো মাঠ কর্মীরা নতুন করে পলিসি করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। নয়তো টাকা দিতে দেরি করবে বলে তারা জানায়। অভিযোগ রয়েছে, গ্রাহককে টাকা ফেরত না দিয়ে জোরপূর্বক ওই কোম্পানিতে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) হিসেবে দীর্ঘ মেয়াদী গ্রাহকের টাকা রেখে দিচ্ছেন কোম্পানি। গ্রাহকের টাকা দ্রুত ফেরত পেতে সংষিøষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন গ্রাহকরা।
এদিকে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও টাকা ফেরত না পাওয়ায় হতাশা দেখা দিয়েছে গ্রাহকের মাঝে। বিষয়টি নিয়ে গ্রাহকের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। কোম্পানি নির্ধারিত সময়ে গ্রাহকের টাকা ফেরত না দেওয়ায় মাঝে মধ্যে কোম্পানির মাঠ কর্মীদের গ্রাহকের হাতে লাঞ্চিত হওয়ার খবরও পাওয়া যায়।

সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির গোবিন্দগঞ্জ জোন কার্যালয়ের ইনচার্জ মোছাঃ রাহেনা আলমের কাছে গ্রাহকের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোম্পানি গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে বিলম্ব করছে। যার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদেরকে। গ্রাহকরা অফিসে গিয়ে টাকার জন্য গাল-মন্দ করছেন। গ্রাহকের টাকা ফেরত না দিয়ে কোম্পানির উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা নতুন বীমা-পলিসি করার জন্য আমাদেরকে চাপ দিচ্ছেন। গ্রাহকের টাকা ফেরত না দেওয়ায় আমরা মাঠে যেতে পারছিনা। মাঠে গেলে আমাদেরকে গ্রাহকের হাতে লাঞ্চিত হতে হচ্ছে। গ্রাহকের টাকা দ্রুত পরিশোধ করতে কোম্পানির উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

জানতে চাইলে কোম্পানির সহ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) আসলাম রেজা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। গ্রাহকের টাকা ফেরত পেতে এত সময় লাগার কথা নয়। কি কারণে গ্রাহক টাকা ফেরত পাচ্ছেনা তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।

আপনার মতামত লিখুন :