লাখাই মুক্তিযোদ্ধা সরকারী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জাবেদ আলীর বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমানিত

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৩:০৭ PM, ০৫ মার্চ ২০২৩

Spread the love

লাখাই (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি;

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার এক মাত্র মুক্তি যোদ্ধা সরকারী ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাবেদ আলীর বিরুদ্ধে দূর্নীতি  অর্থ আত্নসাৎ অনিয়ম ও সেচ্চাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অত্র কলেজের প্রভাসকদের অভিযোগের দরখাস্তের আলোকে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাবেদ আলী কলেজের দায়ীত্ব পাওয়ার পর থেকে তিনি তার নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার  ও সেচ্ছা চারিতার মাধ্যমে দূর্নীতি ও অর্থ আত্নসাৎ সহ নানা বিষয়ে দূর্নীতি করে টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছে। তিনি সরকারী বিধিনিষেধ অমান্য করে সরকারীকরন কলেজের ডি এফ গিপ্ট উল্লেখিত বিগত ১৬জানুয়ারী ১৮ সালে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ফার্নিচার কোথায় আছে তা নিয়ে  জনমনে  নানা  প্রশ্নের উদবেগ দেখা দিয়েছে।

অপর দিকে মাল্টিমিডিয়া ভবনে অফিস স্হানান্তরের কারনে ছাত্র/ছাত্রীদের পাঠদানে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং ঔ ভবনের জন্য বরাদ্ধকৃত প্রয়োজনীয় ল্যাপটপ  থাকা সত্বেও এ গুলো ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পরেছে। এটা তার সেচ্ছা চারিতার  ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বহিপ্রকাশ।

অভিযোগ সুত্রে আরো জানা যায় অধ্যক্ষ জাবেদ আলী কলেজের ছাত্র/ছাত্রীদের কে বাস্তবমুখি ও কর্মমুখি করার জন্য  তার কোন ভুমিকাই নেই। নেই কোন তার পরিকল্পনা।

বিগত ২ জুন ১৮ সালের তারিখে রমজান মাসে ইফতার মাহফিল বাস্তবায়ন না করে ভূয়া ভাইচারের মাধ্যমে ২ লক্ষ টাকা ১৪ হাজার ২শত টাকা উওোলন করে ঔ অর্থ আত্নসাৎ করেছে এবং বিগত ১৮-১৯ অর্থ বছরে শিক্ষা বর্ষে কলেজের ছাত্র/ছাত্রীদের অনলাইনে আবেদন ও নিশ্চায়ন করতে বাধ্য করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা আত্নসাৎ করে। এ ছাড়া ও ২ টি সাইড ড্রাম ও ৩টি কাটি ক্রয় করার নাম করে ২০ হাজার টাকাট আত্নসাৎ করে। অধ্যক্ষ জাবেদ আলী কলেজের অনেক কর্মচারীকে অহেতুক বিভিন্ন ভাবে হয়রানীর করে থাকে মর্মেও দরখাস্ত সুত্রে জানা যায়। ভার প্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাবেদ আলী একজন ইসলামের ইতিহাসের শিক্ষক হওয়া সত্বেও তিনি নিজে ক্লাশ নাকরে খন্ডকালীন একজন শিক্ষক  মিজানুর রহমান নামে এক ব্যাক্তিকে মাসে ৯ হাজার ৫ শত টাকা সম্মানী ভাতা দিয়ে নিয়োগ দিয়েছেন।

তিনি নিয়মিত কলেজে আসেন না মর্মে অভিযোগ রয়েছে। তিনি তার নিজের প্রতিস্টান জি এল ডি পি একটি এন জি ও সংস্হা আছে সেই ব্যাবসায় তিনি বেশী ব্যস্ত থাকেন মর্মেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগকারীদের দরখাস্ত সুত্রে আরো জানা যায় মিলাদ ও দরিদ্র তহবিল নামে ছাত্র/ ছাত্রীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে তাকেন কিন্তু ঔ খাতে ব্যয় না করে নিজেই ঔ ফান্ডের টাকা আত্নসাৎ করে।  শুধু তা নয় তিনি কলেজের নামে অবিশাস্য ও ভৌতিক বিল ভাউছারের মাধ্যমেও অর্থ আাত্নসাৎ করে থাকে। এ ছাড়া অধ্যক্ষ জাবেদ আলী তার আস্তাভাজন শিক্ষক দ্বারা ভূয়া অডিটের নাম করে ৪০ হাজার টাকা আত্নসাতের ও অভিযোগ রয়েছে।

এ দিকে জাতীয় বিভিন্ন দিবসের পালনের নাম করে  অর্ধ লক্ষ টাকার অভিযোগ রয়েছে। বিগত ২২ সেপ্টেম্বর ১৮ সালে কোন ধরনের আয়োজন না করেই আপ্যায়ন বাবদ খরচ ৬০ হাজার টাকা তছড়োপ করেছে। অপর দিকে কলেজ জাতীয় করনের কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য ঢাকা ডি জি অফিসে নজরানার নাম করে ৬৫ হাজার টাকা না দিয়ে তিনি নিজেই ঔ টাকা আত্নসাৎ করে।  এ ছাড়া কলেজে বিভিন্ন অনুস্টান করার নাম করে বাস্তবায়ন কমিটিতে তার আস্তাভাজন শিক্ষক কাইয়ুম আলী ও মুজিবুল হক কে আহবায়ক সাজিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্নসাৎ করেছে মর্মে অভিযোগ সুত্রে জানা যায়।

অপর দিকে বিগত ১৬ ই আগস্ট ১৮ইং তারিখে অধ্যক্ষ জাবেদ আলী তার নিজস্ব প্রতিস্টান জি এল ডি পির চাকুরীজিবী নিয়ে বানিয়াচং এর বিথঙ্গল ও দিল্লীর আখড়ায় নৌ ভ্রমনে কথা থাকা সত্বেও তিনি ঢাকায় যাতায়তের নামে ৫০ হাজার টাকা আত্নসাৎ করে। সুত্রে আরো জানা যায় অধ্যক্ষ জাবেদ আলী ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে যখন তখন টাকা আদায় করে ব্যাংক একাউন্টে জমা না ভূয়া বিল ভাউছারের মাধ্যমে বিপুল পরিমান টাকা আত্নসাতের অভিযোগ রয়েছে।

দরখাস্ত সুত্রে আরো জানা যায় অধ্যক্ষ জাবেদ আলী কলেজ আঙিনায় বাগান তৈরী ও রাস্তা মেরামতের নামে কাজ না করে ৬৯ হাজার ৩শত ৫ টাকা ভূয়া বিল ভাউছারের মাধ্যমে টাকা উওোলন করে আত্নসাত করে। বাস্তবতা দৃস্টে ঔ কাজের কোন আলামত পরিলক্ষিত হয়নি বা তার কার্যকালীন এ ধরনের কোন কাজ হয়নি বলে জানা যায়।  এ দিকে গত ১৮ সালে এইচ এস সির পরীক্ষার সম্মানি ভাতা কমিটির অনেকেই পেয়েছে কিন্তু চার জন শিক্ষক তাদের সম্মানি ভাতা থেকে বঞ্চিত।

এ ছাড়া ১৯ সালের এইচ এস সি পরীক্ষার্থিদের ব্যবহারিক বোর্ড কর্তৃক ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে আদার করা ১৫ হাজার টাকা আত্নসাতের অভিযোগ সুত্রে জানা যায়। অধ্যক্ষ জাবেদ আলীর দূর্নীতি অর্থ আত্নসাত ও সেচ্ছাচারিতার এবং বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্যে ঔ কলেজের প্রভাষক কৃষ্ণ মোহন দাশ প্রভাষক তাপস কিশোর রায় প্রভাষক অজয় কুমার দাশ ও প্রভাষক নয়ন চন্দ্র দাশ সহ ২৮ জন দরখাস্তকারী  বিগত ১৯সেপ্টম্বর ১৯ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মহ পরিচালক ঢাকা বরাবর দরখাস্ত করে।

উক্ত দরখাস্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার লাখাই মুক্তি যোদ্ধা সরকারী ডিগ্রি কলেজে বেলা ১টায় ২ সদস্য বিশিস্ট তদন্ত কমিটির সদস্য উপ-পরিচালক শারীরিক শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মোঃ আক্তারুজ্জামান ভুইঁয়া ও তদন্ত কর্মকর্তা আশেকুল হক সহকারী পরিচালক এইচ আর এম মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা উপস্হিত হয়ে আলাদা ভাবে উভয় পক্ষের বক্তব্য গ্রহন করেন ও যাবতীয় কাগজপত্র পর্যালোচনা করে।

এ ব্যাপারে আক্তারুজ্জামান ভুইঁয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, যেহেতু দূর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত তদন্ত বিষয়টি গোপনীয় তাই এই মহুর্তে কিছু বলা যাবে না।  তবে আপনার মোবাইল নম্বর দেন আপনাকে ১৫ দিন পরে তদন্তের ফলাফল আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে। এ ব্যাপারে কয়েক জন দরখাস্তকারীদের কে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন জাবেদের বিরুদ্যে দূর্নীতির অভিযোগ প্রমান করতে সক্ষম হয়েছি।

অধ্যক্ষ জাবেদ আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তা অস্বীকার করে। অধ্যক্ষ মোঃ জাবেদ আলীর দূর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মোহাঃ আলমগীর হোসেন গত ০৭-১২-২২ ইং তারিখে এক আদেশে বলেন লাখাই মুক্তিযোদ্ধা সরকারী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ জাবেদ আলীকে অপসারণ করে নতুন বিসিএস ক্যাডারের একজন অধ্যক্ষ পদায়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কে আদেশ দিয়েছেন।

লাখাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা সুলতানার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান আমি এখনও কোন আদেশের চিঠি পাইনি। এই আদেশ পাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা নেয়া হবে। কিন্ত ২ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোন চিঠির কার্যকরী ব্যবস্তা নেয়ে হয়নি।

লাখাই উপজেলার সুশিল সমাজ ও প্রভাষক এবং ঔ প্রতিষ্টানের কর্মচারীদের মাঝে নানা গুঞ্জন দেখা দিয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :