লাখাই’র একজন এ্যাডঃ ছালেহ উদ্দীন আহমদের জীবনবৃত্তান্ত

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:১৪ AM, ১৬ জুলাই ২০২২

Spread the love
এম এ ওয়াহেদ, লাখাই (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি;
হবিগঞ্জের লাখাইর কৃতি সন্তান আলহাজ্ব  এ্যাডভোকেট ছালেহ উদ্দিন আহমেদ ১৯৫৫ সালের ১লা ডিসেম্বর হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার ভাদিকারা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ডাক্তার ফিরোজ আলী, মাতা আলহাজ্ব মালেক চাঁন বিবি। তাঁর পিতা ছিলেন একজন পল্লি চিকিৎসক এবং মাতা ছিলেন ভাদিকারা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাক্তন সহকারী শিক্ষকা।
 আলহাজ্ব এ্যাডঃ ছালেহ উদ্দিন আহমেদকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা আদর করে ডাকতেন ছালেহ। শৈশবে তিনি মায়ের কাছে কুরআন শিক্ষা ও নামাজসহ বিভিন্ন মাসলা মাসায়েল শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং শিক্ষিকা মায়ের হাত ধরেই ভাদিকারা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী এবং বামৈ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৭ম শ্রেনী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। অতঃপর ঢাকা মহানগরে অবস্থিত সেগুনবাগিচা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি,সরকারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ’ঢাকা থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ১৯৭৩ সালে এইচএসসি ও ১৯৭৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ডিগ্রি (বিএসসি) পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। একই বছর তিনি তাঁর আপন বড় ভাই, লন্ডনের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও দানশীল ব্যক্তি মোঃ শফি উদ্দিন আহমেদ এর আমন্ত্রণে ইংল্যান্ড (লন্ডন) গমন করেন।
উল্লেখ্য যে, লন্ডনে তিনি ব্যবসা বানিজ্যসহ নানাবিধ সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র জনগণের সেবা করার জন্য দেশে ফেরত আসেন।এরপর ১৯৮৪ সালে ঢাকা মহানগরে অবস্থিত সিটি ল’কলেজ থেকে এল-এল বি ডিগ্রি লাভ করেন।৬ নভেম্বর৮৫ সালে  অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ২৬ নভেম্বর ৮৫ সালে হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ লাভ করেন।
 আলহাজ্ব এ্যাডঃ ছালেহ উদ্দিন আহমেদ হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হওয়ার পর থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত সততা ও সুনামের সাথে আইনপেশায় নিয়োজিত আছেন। এই দীর্ঘ সময়ে আইনপেশায় নিয়োজিত থেকে অসংখ্য গরীব, নিরীহ মানুষকে আন্তরিক ভাবে আইনগত সহায়তা প্রদান করে আসছেন। দীর্ঘ ৫ বছর তিনি হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে সততা নিষ্ঠার দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ২০০৯/২০১০ সালে হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক,২০১৫/২০১৬ সালে হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
সামাজিক জীবনে ছালেহ উদ্দিন আহমেদ ১৯৯৯/২০০০ সেশনে সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৯/২০১০ সেশনে সভাপতি হিসেবে রোটারী ক্লাব অব হবিগঞ্জ এর দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া দীর্ঘ দিন হবিগঞ্জ ইসলামীয়া এতিমখানার যুগ্ন সম্পাদক, জেলা মানবাধিকার কমিটির সদস্য, হবিগঞ্জ কলেজ কোয়ার্টার জামে মসজিদের সভাপতি, তৎকালীন দিগন্ত পরিবহন এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে তৎকালীন প্রয়াত সংসদ সদস্য আবু লেইছ মোঃ মুবিন চৌধুরীর মাধ্যমে লাখাই উপজেলার প্রতিটি গ্রামে অসংখ্য রাস্তা ঘাট,ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ ও  মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়ন সাধন করেন।
বর্তমানে লাখাই উপজেলা সদরে অবস্থিত লাখাই থানা কমপ্লেক্স ভবনের জমি তৎকালীন সময়ে নাম মাত্র মূল্যে কেবল মাত্র এলাকার উন্নয়নের জন্য সরকারকে প্রদান করেন।
আলহাজ্ব এ্যাডঃ ছালেহ উদ্দিন আহমেদ ছাত্র জীবন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত অবস্থায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতেন। ৮০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে আইনপেশায় নিয়োজিত হওয়ার পর থেকেই জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জীবিত ও বিশ্বাসী হয়ে পড়েন।
তিনি বিশ্বাস করেন কেবল মাত্র জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হলেই জনগণের সেবা করা যায়। এ সকল মনোবাসনা নিয়ে তিনি বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জীবদ্দশায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লাখাই উপজেলা বিএনপির সদস্য ছিলেন।
পরবর্তীতে তৎকালীন হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ফারসু ও সাধারণ সম্পাদক এড: চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমান ১৯৯৭ সালের মার্চ মাসে তাঁকে লাখাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে লাখাই উপজেলা বিএনপির সর্বোচ্চ নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর পথচলা শুরু হলো।
আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি প্রতিটি গ্রামে ও ওয়ার্ড পর্যায়ে তথা সমগ্র লাখাই উপজেলায় রাজনৈতিক সফর শুরু করেন। প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটি গঠন এবং তার সম্বন্নয়ে ইউনিয়ন কমিটি গঠন করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। এভাবে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১৯ সালের ২৩ জুন পর্যন্ত তিনি লাখাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই দীর্ঘ ২৩ বছরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি লাখাই উপজেলা বিএনপিকে সুসংগঠিত করে একটি সফল ও শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি একজন সফল রাজনীতিবিদ।
তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি সমগ্র লাখাই উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা বিচরণের মাধ্যমে বিএনপিকে পরিপূর্ণতা দান করেন। এ্যাডঃ ছালেহ যুক্তরাষ্ট্রের কানিক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের বিএনপির কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হন।
 তিনি একজন ধর্মপরায়ন মুসলমান। ব্যক্তিগত ইবাদত বন্দেগী সহ দান খয়রাত তাঁর পারিবারিক শিক্ষা। তিনি ১৯৯৭ সালে তাঁর মা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকা মালেক চাঁন বিবিকে নিয়ে পবিত্র হজ পালন করেন। ভাদিকারা ইসলামীয়া মাদ্রাসা ও ভাদিকারা দক্ষিণ গ্রাম জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠায় রয়েছে তাঁর আর্থিক ও শারীরিক অবদান রয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :