লকডাউন পেরিয়ে হাফ ডাউনে ঘোড়াঘাট

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০২:৪৫ PM, ২৪ এপ্রিল ২০২১
smart

Spread the love

লোটাস আহম্মেদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি;

লকডাউনের নির্দেশনা অমান্য করে যত্রতত্র জনসমাগম এবং হাট-বাজারের দোকানপাটে অর্ধ শাটার খোলা রেখে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় লকডাউনের পরিবর্তে চলছে হাফডাউন।

চলমান মহামারী করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপ থেকে রক্ষায় সরকার গত ১৪ এপ্রিল থেকে সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করে। এক সপ্তাহের এই লকডাউন কঠোর করতে ১৪ তারিখ থেকেই মাঠে নামে স্থানীয় প্রশাসন। তৃতীয় দফায় লকডাউন আরো এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করে সরকার। দ্বিতীয় ধাপের লকডাউনের প্রথম কয়েকদিন ঘোড়াঘাটে কঠোর ভাবে লকডাউন পালন হলেও, এখন পালিত হচ্ছে হাফডাউন।

শনিবার (২৪ এপ্রিল) উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট এবং হাটবাজার গুলো ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ কোন ধরণের স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই স্বাভাবিক সময়ের মত ঘোরাফেরা করছে। সামাজিক দুরত্ব চোখে পরার কোন সুযোগ নেই। পাশাপাশি মাস্ক মুখে না লাগিয়ে শার্ট কিংবা প্যান্টের পকেটে রেখেছে অধিকাংশ ব্যক্তি। কেও কেও হাত দিয়ে নাক চেপে ধরে তাদের প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করছে। তবে অধিকাংশ মহিলা মাস্ক ব্যবহার করছে। অনেকে আবার ওড়না মুখে পেঁচিয়ে অথবা হাত দিয়ে নাকে চেপে ধরে বাজারহাট করছে।

লকডাউনের মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী কাঁচা বাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানপাট উন্মুক্ত স্থানে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা থাকলেও ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রশাসন তা বাস্তবায়নের ব্যর্থতার ভূমিকা পালন করেছে। এই উপজেলার কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানপাট ব্যস্ততম বাজার গুলোতেই বসছে এবং এসব দোকানপাট রাত ১০টা পর্যন্ত নিয়মিত খোলা থাকছে।

তবে মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রথম ধাপে গত বছর লকডাউনে উপজেলা প্রশাসন এই উপজেলার আজাদমোড়ের কাঁচা শাক সবজির ব্যবসায়ীদের ঘোড়াঘাট ফুলবল খেলার মাঠের উন্মুক্ত স্থানে বসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ওসমানপুরের কাঁচা শাক সবজির বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল ঘোড়াঘাট সরকারী কলেজ মাঠে।

অপরদিকে শপিংমল সহ অন্যান্য দোকানপাট বন্ধ থাকার কথা থাকলেও, নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কাপড়, কসমেটিকস্ এবং অন্যান্য দোকানপাটে শাটার অর্ধেক খোলা রেখে বেচাকেনা করছে দোকানদাররা। তবে এসব দোকানদাররা বেশ কৌশলে তাদের দোকানপাঠ খোলা রাখছে। লকডাউনের প্রথম কয়েকদিন হাটবাজার গুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ বাজার গুলোতে ঢুকলে এসব দোকানদাররা তাদের দোকানের অর্ধেক খোলা রাখা শার্টার দ্রুত বন্ধ করে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ফলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হচ্ছে প্রশাসন। অনেক ক্ষেত্রে হাট বাজার গুলোতে প্রশাসনের সাথে লুকোচুরি খেলতে দেখা গেছে এসব ব্যবসায়ীদের।

ঘোড়াঘাট আজাদমোড়ের কসমেটিকস্ ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, সরকার লকডাউন দিয়েছে। তবে পেটের দায়ে আমরা সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে দোকানপাট খোলা রাখছি। পেট তো আর কোন গল্প শুনবে না। দোকানপাট খোলা রেখেও খুব একটা শান্তিতে নেই। সব সময় চোখ কান সড়কের দিকে। প্রশাসন কখন না ঢুকে পরে। দুইদিন ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানাও করেছে। কিন্তু কিছু করার নেই। সব কিছু উপেক্ষা করে দোকান খোলা রাখতে বাধ্য হচ্ছি।

ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিউল আলম বলেন, লকডাউনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা প্রতিদিন মাঠে কাজ করছি। নির্দেশনা অমান্যকারী ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি এবং প্রয়োজনে জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু জনগণ সচেতন না হলে আমাদের পক্ষে আর কি করা সম্ভব! উপজেলার হাট বাজার গুলোতে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি।

তিনি আরো বলেন, অনেক ব্যবসায়ী আইন অমান্য করে দোকানের সার্টার অর্ধ খোলা রেখে কেনাবেচা করার চেষ্টা করছে। কোন ব্যবসায়ী ক্রেতাদেরকে দোকানের ভেতরে ঢুকিয়ে নিয়ে ভিতর থেকে সার্টার তালা দিয়ে কেনাবেচা করছে। আবার তারা আমাদের উপস্থিতি টের পেলেই দৌঁড়িয়ে এদিক সেদিক পালিয়ে যাচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুন :