যমুনার ভাঙনে বিলীন প্রাথমিক বিদ্যালয়, পড়ালেখা অনিশ্চিত শিক্ষার্থীদের
স্টাফ রিপোর্টার;
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ফজুলুপুরের কাউয়াবাঁধা ও উজালডাঙ্গায় যমুনার নদীর ভাঙনের কবলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে উজালডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেই সঙ্গে দুই গ্রামের চার শতাধিক পরিবারের সঙ্গে তিন শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর পড়ালেখাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
গত তিন মাসে যমুনা ভাঙনে উজালডাঙ্গা ও কাউয়াবাঁধা গ্রামের প্রায় চার শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়াও তিনটি মসজিদ, একটি এতিমখানা ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন স্থানান্তর করা হয়েছে। বিলীন হয়েছে কৃষকের কয়েকশত বিঘা উঠতি ভুট্টার জমি।
উজালডাঙ্গা গ্রামের মুনির হোসেন জানান, চরের জমিজমা নিয়ে এতটা চিন্তিত না, তবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ও মাঠ বিলীন হওয়ায় বেশি চিন্তিত। কেননা এই বিদ্যালয়ে অন্ততপক্ষে তিনশত ছেলে-মেয়ে পড়ালেখা করতো। পরিবারের লোকজনের সাঙ্গে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন চরে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয়টি কোথায় কিভাবে গড়ে তোলা হবে স্থানীয়ভাবে এর কোন সিন্ধান্ত হয়নি।
কাউয়াবাঁধা গ্রামের ছকিনা বেগম জানান, আমার দুটি সন্তান এই স্কুলে পড়তো কিন্তু, এখন তো আর সুযোগ থাকলো না। আশপাশের চরগুলোতেও স্কুল নেই বলে জানান তিনি।
উজালডাঙ্গা গ্রামের ময়নাল বেপারী বলেন, নদীভাঙনের ফলে বিদ্যালয়ের টিন, খুটি একটি নীচু স্থানে রাখা হয়েছে। কোনদিন গড়ে তোলা হবে তা অশ্চিত এবং শিক্ষার্থীদের পাঠদানও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জানান, বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রয়োজন সরকারি সিদ্ধান্ত।
স্থানীয় অভিভাবক মোবারক হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের সবগুলো শিক্ষক মেইনল্যান্ড থেকে আসেন। তাদের ৪ঘন্টা আসা-যাওয়াতেই সময় শেষ হয়। আবার সব শিক্ষককে প্রতিদিন দেখা যায় না। স্কুল ভবন না থাকার অযুহাতে এখন তাদের আর দেখাও যাবে না বলে জানান তিনি।
তবে, গত বুধবার সরেজমিনে গিয়েও দেখা যায়, পাঁচজন শিক্ষকের মধ্যে মাত্র একজন সহকারী শিক্ষক বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র স্থানান্তরে সহযোগিতা করছেন। ফুলছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসার বেলাল হোসেন জানান, বিদ্যালয়টি নদীভাঙনের মুখে পড়ায় আসবাবপত্র ও অন্যান্য উপকরণ স্থানান্তর করে একটি স্থানে রাখা হয়েছে। স্থানীয়রা জমি দিলে ঘর তোলা হবে। যদি স্কুলের জন্য জমি কেউ না দেয় তাহলে স্কুলটি বিলুপ্তির জন্য সুপারিশ করা হবে।

