মাস না যেতেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে ফাটল

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১২:৪৫ AM, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

Spread the love

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার’ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর একমাস না যেতেই ফাটল দেখা দিয়েছে। রয়েছে ভেঙে পড়ার আশংকা। কিন্তু বরাদ্দ অনুযায়ী সর্বোচ্চ উন্নতমানের কাজ করা হয়েছে বলে দাবি করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামকৃষ্ণ বর্মন।

উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়নের চাঙ্গুরা গ্রামের মরাবস্তা পুকুর পাড়ে বসবাসরত সাঁওতাল (আদিবাসী) সস্প্রদায়ের ৫০টি পরিবারকে মুজিববর্ষে পুনর্বাসনের লক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ একমাস না যেতেই সেই ঘরে দেখা দিয়েছে ফাটল।

সরেজমিনে মরাবস্তা পুকুর পাড়ে শাহেনা হেমরম নামের সুবিধাভোগির ঘরে ফাটল দেখা গেছে। কথা হয় শাহেনা হেমরমের সাথে।

তিনি বলেন, নিজেদের জমি না থাকায় পুকুরপাড়ে সরকারের খাস জমিতে মাটির তৈরী ঘরে পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাটির তৈরী ঘর ভেঙে ফেলে শাহেনা হেমরমের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয় আশ্রয়ণ প্রকল্পের সেমি পাকা ঘর। কিন্তু সেই ঘরে বসবাসের আগেই দেয়াল সহ মেঝেতে দেখা দিয়েছে ফাটল।

শাহেনা হেমরম বলেন, ঘরে বসবাসের আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে। ওই ঘরে বসবাস করতে গিয়ে মৃত্যুর আশংকা রয়েছে। সরকার আমাদের জন্য বরাদ্দ দেয় ঠিকই। কিন্তু যারা এসব কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকে তারা কাজ ভালো করেননা।

কথা হয় পাশের বাড়ীর আশামনি নামের এক নারীর সাথে। তিনি তার ছেলে মালেনের নামে বরাদ্দ পেয়েছেন একটি ঘর। সেই ঘরে বসবাসের আগেই বারান্দা ধসে যাচ্ছে। ঘরের চালাতেও ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী।

আশামনি বলেন, এরচেয়ে আমাদের মাটির ঘরই নিরাপদ ছিল। বড় ধরণের কোন দুর্যোগ দেখা দিলে ওই ঘরে থাকা যাবেনা। দেয়াল গাঁথুনিতে ঠিকমত সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। বালুর ভাগ বেশি দেওয়ার কারণে ঘরে এখনই ফাটল দেখা দিয়েছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ওই ঘরের ভিত্তি দেওয়া হয়নি। ঘরের নিলটন নেই। মিস্ত্রিদের এসব বিষয়ে বলতে গেলে আমাদের ধমক দিয়ে কথা বলে। ওই ঘরে থাকাটা আমাদের নিরাপদ হবেনা।

হোদগো নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, আমার নামের বরাদ্দকৃত ঘর নির্মাণের সময় দেয়াল ভেঙে পড়েছিল। অল্পের জন্য মিস্ত্রিদের লোক বেঁচে গেছেন। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এই ঘরে থাকাটা আমাদের নিরাপদ মনে হচ্ছে না। ঘর কতটা মজবুত হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

গ্রাম ঘুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কয়েকটি ঘরে একই চিত্র দেখা গেছে। উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১২০টি ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

প্রকল্পের সদস্য সচিব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্তকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাকে প্রকল্পের সদস্য সচিব করা হলেও কাজগুলো ইউএনও স্যার নিজেই বাস্তবায়ন করছেন। এসব বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। আপনারা ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলুন।

জানতে চাইলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মন বলেন, এই বরাদ্দে এরচেয়ে ভালো কাজ করা সম্ভব নয়। ঠিকাদারকে দিয়ে তো এ টাকায় কাজ করাই যেত না। তিনি বলেন, সচিবালয়ে এসব নিয়ে আপনাদের (সাংবাদিক) একজন আমাদের পেছনে লেগেছিল। তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :