মাধবপুরে গরু ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি;
হবিগঞ্জের মাধবপুরে গরু ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার রাত ৩টায় উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের শিয়ালউড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় একদল মুখোশদারী ডাকাত অস্ত্রের মুখে বাড়ির বাসিন্দাদের জিম্মি করে দেড় ভরি স্বর্ণ, নগদ প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
বাড়ির বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, শনিবার ভোরে আমার এবং আমার ছেলে মুখলেছুর রহমান ও দুধ মিয়ার ঘরের দরজা ভেঙ্গে ডাকাত দল ঘরে ডুকে সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রায় সাড়ে ৩লক্ষ টাকা ,দেড় ভরি স্বর্ণ,মোবাইল ফোনসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে রাতেই মাধবপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে ডাকাত আতংকে নির্ঘুম রাত্রীযাপন করে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা। মানুষ যখন রাতে স্বস্তির ঘুমের প্রস্তুুতি নিচ্ছিলেন তখনই গ্রামের মসজিদে মসজিদে মাইকিং করে এলাকায় ডাকাত পরতে পারে বলে জানানো হয়। সবাইকে সাবধান থাকতে বলা হয়। বিশেষ করে বহরা, চৌমুহনী ও ধর্মঘর ইউনিয়নের বিভিন্ন মসজিদ থেকে ভেসে আসতে থাকে একই ঘোষণা। মুহূর্তে উধাও হয়ে যায় স্বস্তির ঘুম। লাঠি, দা, চল (টেটা), রামদা, ছেনা, বগি ও টর্চ লাইট নিয়ে ঘরের বাইরে নেমে পাহারা দিতে থাকে বিভিন্ন এলাকার মানুষ। তবে পুলিশ প্রশাসন থেকে বলছে তারা গোপন তথ্যের ভিত্তিত্বে সবাইকে সর্তক থাকতে বলছে কোন মাইকিং করেনি।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) রাত ১১টার কিছু পর থেকে বহরা ও চৌমুহনী, ধর্মঘর ইউনিয়নে বিভিন্ন মসজিদ থেকে মাইকে ডাকাত পড়ার ঘোষণার খবর পাওয়া যায়। এতে মধ্য রাতে ওই তিন ইউনিয়নের গ্রামের পর গ্রামে এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ঘটনার সত্যতা জানার চেষ্টা করেন।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মসজিদের মাইকে ঘোষণা করেন ‘পুলিশ বলছে এলাকায় ডাকাত পরতে পারে(আসতে পারে) সবাই সর্তক থাকবেন।’ মুহূর্তে সে খবর ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়ও। কিছু কিছু গ্রামে মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। আতংকে গ্রামবাসী তাৎক্ষনিক পাহাড়ার ব্যবস্থা করেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ‘ডাকাত আসছে’ খবরটি মসজিদের মাইকে শুনেছেন বলে জানান। অনেকেই এটা বিশ্বাসও করে আত্মীয়স্বজনদের ফোন করে সারারাত সজাগ থাকতে সতর্ক করেন। তারপর কেউ কেউ আতংকগ্রস্ত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিতে থাকেন। এর পর আতঙ্ক আরো বেশি ছড়িয়ে পড়ে। পরে জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে বিভিন্ন জায়গায় টহল দেওয়া হয়। পাশাপাশি গ্রাম পুলিশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের সমন্বয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়।
ধর্মঘর ইউ/পি চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ পারুল জানান,পুলিশ আমাদের কে সর্তক করার পরপরই স্থানীয়দের নিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করি তারপরও শিয়ালউড়িতে ডাকাতি ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে মাধবপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছে।
বহরা ইউনিয়নের মনিরুল ইসলাম সজিব তার ফেইসবুক আইডি থেকে লিখেন- চলছে পাহাড়া দেওয়া। মাইকে ঘোষনা দেওয়া হইছে ডাকাতির সম্ভবনা রয়েছে। তাই আমার ফ্রেন্ড লিস্টে আমার এলাকার যারা আছেন, সর্তক থাকি এবং সজাগ থাকি। বহরা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের বাদল মিয়া ফেইসবুক আইডিতে লিখেন ডাকাতির সম্ভবনা রয়েছে। সবাই সাবধান।’মাধবপুর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। শিয়ালউড়ির ঘটনার খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছি। গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে মাধবপুর উপজেলার বাসিন্দাদের সতর্ক করতে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। আমি এবং মাধবপুর-চুনারুঘাট সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসিন আল মুরাদ স্যারসহ আমাদের টিম নিয়ে সর্তক অবস্থানে আছি। কিছু কিছু এলাকার জনপ্রতিনিধিদের ফোন করে বলা হয়েছিল, সতর্ক থাকতে এবং কোনো তথ্য পেলে পুলিশকে জানানোর জন্য। কিন্তু এ ঘটনাকে কেউ কেউ অতি উৎসাহিত হয়ে অতিরঞ্জিত করেছে।

