বাগেরহাটে শ্বাশুড়ির পরকিয়ায় বাধা; ৮ মাসের অন্ত:সত্ত্বা গৃহবধুকে কুপিয়ে আহত
এ এইচ নান্টু, বাগেরহাট প্রতিনিধি;
রামপালে শ্বাশুড়ির পরকিয়ায় বাধা দেওয়ায় ৮ মাসের অন্ত:সত্ত্বা গৃহবধুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। মারধরে আহত অন্ত:সত্ত্বা গৃহবধু সাদিয়া আকতার মান্নিকে (১৯) বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মান্নি খুলনার আযম খান সরকারী কমার্স কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
পরিবারের অভিযোগ, চলতি বছরের ৬ জানুয়ারী বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রনসেন গ্রামের আশিকুর রহমান সোহানের সাথে সাদিয়া আকতার মান্নির বিয়ে হয়। বিয়ের ৩ মাস পর মান্নি জানতে পারে তার শ্বাশুড়ি পরকিয়ায় আসক্ত। এঘটনাটি স্বামীকে জানালে শুরু হয় নানা অত্যাচার নির্যাতন। একপর্যায় মান্নি আট মাসের অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়লে তার ওপর বেড়ে যায় নির্যাতন। এ ঘটনায় মান্নির পরিবার বাগেরহাট লিগ্যাল এইডে বিচার চেয়ে আবেদন করে। সেখানে তার স্বামী আশিকুর রহমান সোহান স্ত্রীকে মেনে নিবে না বলে চলে যায়। পরের দিন ৯ ডিসেম্বর সন্ধায় মান্নির বাড়িতে আসে আশিকুর রহমান সোহানসহ আরও কয়েকজন। এসময় মান্নির মা অতিথি আপ্যায়নে ব্যস্ত থাকেন। এরইমধ্যে ঘরের বারান্দায় বসে অন্ত:সত্ত্বা মান্নিকে মেরে ও মাথায় কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় তারা। এরপর মান্নিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সাদিয়া আকতার মান্নির মা সাকিরা বেগম বলেন, আমরা দুপক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে পারিবারিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মান্নির বিয়ে দেই। সামান্য ঘটনা নিয়ে এরকম আমার মেয়ের ওপর হামলা করবে তা কখনো বুঝতে পারিনি। মান্নির গর্ভে একটি সন্তান রয়েছে । আমি মা হিসেবে মেয়ের ওপর হামলাকারিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।
সাদিয়া আকতার মান্নি বলেন, বিয়ের দুমাস পরই শ্বাশুড়ির পরকিয়ার বিষয়টি জানতে পারি। তখন আমার স্বামীকে অবহিত করি। এরপর থেকেই আমার ওপর শ্বাশুড়ি ও স্বামী দুজনেই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। অনেক সময় মুখ বুঝে সহ্য করতাম। এরপর আরও বেশি নির্যাতন করায় আমার পরিবারকে জানাই। ঘটনার দিন আমি কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই মারধর শুরু করে। আমি বিচার চাই। বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারী) ডা. মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, সাদিয়া আকতার মান্নি বর্তমানে আশংকামুক্ত। তার গর্ভের সন্তান কেমন আছে আমরা পরিক্ষা নিরিক্ষা করছি। বাগেরহাট পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র বলেন, আহত গৃহবধুর পরিবার থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

