পুলিশের সহযোগিতায় জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ
গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পুলিশের সহযোগিতায় এক কৃষকের জমি দখলে চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারী) জমিতে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছেন গ্রামবাসী।
জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের কামারদহ সোনারপাড়া গ্রামের মৃত নঈম উদ্দিনের ছেলে জবেদ আলী ও মেহেদুল ইসলামের সাথে পার্শ্ববর্তী গ্রাম কামারদহ ব্যাপারীপাড়ার বাসিন্দা ছামছুল হক সরকারের ছেলে রশিদুল ইসলামের দীর্ঘদিন ধরে ৭০ শতাংশ জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে মামলা করেন জবেদ আলী।
অপরদিকে, রশিদুল ইসলামের স্ত্রী শিরিনা আক্তার ওই বিরোধপূর্ষ জমিতে অনুপ্রবেশ ও দখলের চেষ্টার অভিযোগ এনে গাইবান্ধা এডিএম কোর্টে ১৪৪/৪৫ ধারায় ২৫৪/২০১৯ পিটিশন মামলা করেন। ৬০ দিন পর পিটিশন মামলা অকার্যকর হয়। ওই জমিতে জবেদ আলী ও মেহেদুল ইসলাম কয়েকদিন আগে ধান রোপন করেন।
এরই একপর্যায়ে শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারী) প্রতিপক্ষ রশিদুল ইসলাম ও তার লোকজন পুলিশের সহযোগিতায় বিরোধপূর্ণ জমি দখলের চেষ্টা করে। এসময় গ্রাবাসীর বাধার মুখে পুলিশ ঘটনাস্থল (জমি) থেকে ফিরে আসে। উক্ত ঘটনায় রশিদুল ইসলামের শ্যালক মেহেরুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের লোকজনকে মারধরের অভিযোগে জবেদ আলী, মেহেদুল ইসলাম ও ব্যবসায়ী ফয়জুল ইসলাম সহ ৭জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ শাকিরুল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় ওই এলাকার শত শত নারী-পুরুষ জমিতে দাড়িয়ে পুলিশের সহযোগিতায় জমি দখলের চেষ্টার প্রতিবাদ জানান। সেইসাথে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান গ্রামবাসী।
গ্রামবাসী ওইদিন বেলা ১২ থেকে প্রায় ঘন্টাব্যাপি জমিতে দাড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। এসময় শাহিদুল ইসলাম, আনছের ও বাদশা নামের স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, পুলিশ এসে ওই জমিতে রোপন করা ধান নষ্ট করতে বলেন। এরপর বিভিন্ন খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে পুলিশ। আমরা পুলিশের এমন আচারনের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। সেইসাথে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান গ্রামবাসী।
জবেদ আলী বলেন, বাপ-দাদার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তিতে আমরা ধান রোপন করি। প্রতিপক্ষ রশিদুল ইসলাম প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশের সহযোগিতায় আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করছে। সেখানে কোন মারামারির ঘটনা ঘটেনি। অথচ আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, রশিদুল ইসলাম সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের সচিবালয়ে উচ্চমান সহকারী পদে চাকরী করেন। এরই প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে পুলিশ তার পক্ষ নিয়ে কাজ করছেন।
রশিদুল ইসলাম বলেন, আমরা ওই জমি এক ব্যক্তির কাছ থেকে ক্রয় করেছি। বর্তমান মাঠ রেকর্ড পর্যন্ত আমাদের নামে আছে। এরআগেও জবেদ আলীসহ অন্যরা ওই জমি দখলের চেষ্টা করেছিল।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের এসআই আরিফুল ইসলাম বলেন, আমার সিনিয়রের নির্দেশে আমি সেখানে যাই। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য দেওয়ার এখতিয়ার নেই। আমার অথরিটি আছে আপনারা তাদের সঙ্গে কথা বলুন।
জানতে চাইলে গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল হোসেন জানান, রশিদুল ইসলাম সচিবালয়ে চাকরী করেন। আর পুলিশ কেন জমি দখল করে দিতে যাবে।
জবেদ আলীর জমির কোন দলিলপত্র নেই বলে দাবী করেন তিনি। এ ঘটনায় এলাকায় তমথমে ভাব বিরাজ করছে।

