জাতীয়করণের আশায় যত্রতত্র গড়ে উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৫:৫৫ PM, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

Spread the love
শাহারুল ইসলাম, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় সরকারীকরণের আশায় যত্রতত্র গড়ে উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। পলাশবাড়ী উপজেলায় ২১৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং অসংখ্য এবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে।
এছাড়াও দীর্ঘদিন থেকে এবতেদায়ী মাদ্রাসার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম চালিয়ে আসলেও শিক্ষকদের বেতন-ভাতা না থাকায় এরই মধ্যে কিছু এবতেদায়ী মাদ্রাসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এরপরও এ উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় সরকারীকরণের আশায় যত্রতত্র অসংখ্য প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।
এ বিদ্যালয়গুলোতে সাইনবোর্ড এবং শুধুমাত্র কাগজ-কলমে দেখিয়ে ম্যানেজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষা অফিসের যোগসাজশে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষরা জোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যেখানে সেখানে গড়ে ওঠা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নেই কোনো ছাত্র-ছাত্রী, যেখানে মানা হয়নি নির্দিষ্ট এলাকার দূরত্ব (ক্যাচমেন্ট), নেই অবকাঠামো, বছরজুড়ে দেখা মেলে না ছাত্র-শিক্ষকের, হয় না ক্লাস। অন্য মাদরাসা থেকে ছাত্র-ছাত্রী এনে সমাপনী পরীক্ষাতে অংশগ্রহণ করানোসহ শুধু কাগজ-কলমেই বিদ্যালয়গুলো চলমান দেখানো হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একটি টিনশেড ঘর ও সাইনবোর্ড ছাড়া শিক্ষা কার্যক্রমের কোনো বালাই নেই। তবুও বেশকিছু বিদ্যালয়ের নামে দেওয়া হয়েছে ইএমআইএস কোড। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, নতুন করে সরকারের কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করার চিন্তা-ভাবনা নেই তবে কোনো মৌজায় বিদ্যালয় না থাকলে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অথচ গত বছর দুর্নীতির অভিযোগে বদলি হওয়া ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালামসহ কতিপয় উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) গজে ওঠা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টদের পাঠ্যপুস্তক দেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাজমা বেগম এ উপজেলায় যোগদান করার পর যত্রতত্র বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে বিদ্যালয়গুলোর অস্তিত্ব না পাওয়ায় এ বছর ওইসব বিদ্যালয়ে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা বন্ধ করে দেয়। তবুও এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা থেমে নেই তাদের দৌড়ঝাঁপ।
এরই মধ্যে যে বিদ্যালয়গুলোকে ইএমআইএস কোড দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলোÑ ডাঙ্গাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, চকপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, গলদহপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেরবাকুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, আসমতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেশবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, দৌলতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ রামকৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবত্তর কলাগাছী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম বেড়াডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, নামাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, মালতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহদীপুর মধ্যপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, লোকমানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভবানীপুর দক্ষিণপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেকানী পূর্বপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীকলা প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীখন্ডি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেখ রাসেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামকৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব রামচন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পূর্ব নয়ানপুর দক্ষিণপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে জানা যায়, অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে সেগুলোতেই ছাত্র-ছাত্রী সংকট। আবার বিদ্যালয় থাকা অবস্থায় যদি আবারও নতুন করে বিদ্যালয় হয় তাহলে বিদ্যালয় থাকবে তবে ছাত্র-ছাত্রী পাওয়া যাবে না। শুধু সরকারের টাকা অপচয় হবে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমা বেগম জানান, উপজেলায় কোথাও এই বিদ্যালয়গুলো নেই এবং আমার জানার বাইরে। তাছাড়া এসব স্কুলে এবার বই দেওয়া হয়নি। তিনি আরো জানান, নির্দেশনা না থাকলে এসব বিদ্যালয় কীভাবে হবে আমার জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান নয়ন জানান, নিয়ম বহির্ভূতভাবে যদি কোনো বিদ্যালয় হয় তাহলে আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিব। তাছাড়া নতুন করে আর কোনো বিদ্যালয় হবে না।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জানান, এ বিষয়গুলো আমি বিভিন্নভাবে জানছি যেহেতু সরকারের সিদ্ধান্ত আসেনি এ কারণে আমার কোনো মন্তব্য নেই।

আপনার মতামত লিখুন :