চাঁদাবাজি মামলায় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১০:৩৭ AM, ২২ ডিসেম্বর ২০২০

Spread the love

লোটাস আহম্মেদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি;

সংখ্যা লঘু নির্যাতন। তাদের বাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের হুমকি। কিংবা দেশ থেকে বিতাড়িত করার ঘটনা ঘটলেই, সব সময় বিএনপি অথবা জামায়াতের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ উঠে এসেছে। তবে এবার বিএনপি-জামায়াতের সেই রুপ ধারণ করে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা করে যাচ্ছে যুবলীগ নেতা ওয়াকার আহম্মেদ নান্নু।

গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা ওয়াকার আহম্মেদ নান্নু (৩৬) ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার খোদাদাতপুর গ্রামের মৃত শাহাবুদ্দিন খানের ছেলে।

সংখ্যা লঘু নারীর বাড়িতে গিয়ে চাঁদা দাবি, শ্লীলতাহানি ও রাতের আধারে পেট্রোল বোমা ঢেলে পুড়িয়ে মারার হুমকি এবং অপর আরেক ব্যক্তির কাছে চাঁদা দাবি ও মারপিটের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় গতকাল সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে ঘোড়াঘাট পৌর যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ওয়াকার আহম্মেদ নান্নুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সময় মেডিকেল টেষ্টে মাদক সেবনের প্রমাণ মেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে যুবলীগের এই নেতাকে ১ বছরের সাজা প্রদান করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট রাফিউল আলম।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওয়াকার আহম্মেদ নান্নু সহ অজ্ঞাত ৫ থেকে ৬ জন শ্যামপুর কলেজপাড়া গ্রামের বিমুল টুডুর স্ত্রী শ্রীমতি আনলী মূর্মূ বাড়িতে গিয়ে নিজস্ব বাগানের গাছ বিক্রি বাবদ দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এসময় চাঁদা না দেওয়ায় ওই সংখ্যালঘু নারীর চুলের মুটি ধরে মারপিট করে এবং পরিহিত কাপড় চোপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানী ঘটায়। এছাড়াও রাতের আধারে গাছ কেঁটে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন এবং পুলিশকে জানালে রাতের আধারে বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে সকলকে পুঁড়িয়ে মারার হুমকি দেওয়া হয়। পরে ওই নারী বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেন।

অপরদিকে, আরেকটি এজাহারে দেখা যায়, পৌর এলাকার চকবামুনিয়া বিশ্বনাথপুর গ্রামের মৃত তৈয়ব আলী মুন্সির ছেলে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আমির হোসেন গাইবান্ধার চর এলাকা থেকে এসে এই এলাকা কিছু জমি কবলা খরিদ করে বসবাস করে আসছিল। সেখানে যুবলীগ নেতা নান্নু সহ ৬ জন গিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় সংঘবদ্ধ চক্রটি রড ও বাঁশ দিয়ে ওই স্কুল শিক্ষককে বেধড়ক মারপিট করে এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে স্কুল শিক্ষক আমির হোসেন বাদী হয়ে ৬জনের নাম উল্লেখ করে থানায় এজাহার দায়ের করে।

মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিম উদ্দিন বলেন, নান্নুর বিরুদ্ধে ঘোড়াঘাট থানায় চাঁদাবাজী ও ভূমি দখলের বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। নতুন করে তার নামে আরও দুটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীরা। সে সংখ্যালঘু নারীর বাড়িতে প্রবেশ করে মারধর এবং বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদান করেছে। নতুন এই দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ মঙ্গলবার তাকে দিনাজপুর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরদিকে ,তাকে গ্রেপ্তারের পরে মেডিকেল টেষ্টে মাদক সেবনের প্রমাণ পাওয়ায় ভ্রাম্যমান আদালত তাকে সাজা প্রদান করেছেন।

উল্লেখ্য, বহুল আলোচিত ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলা ও হত্যা চেষ্টার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যুবলীগ নেতা ওয়াকার আহম্মেদ নান্নুকে আটক করেছিল পিবিআই। সেই সময়েই এলাকা জুড়ে বেশ সমালোচিত হয় যুবলীগের এই নেতা।

আপনার মতামত লিখুন :