গোবিন্দগঞ্জে ১৭টি ভুয়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির নিবন্ধন বাতিল দাবি

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৮:২৭ PM, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

Spread the love

স্টাফ রিপোর্টার;

গোবিন্দগঞ্জে অবৈধভাবে ১৭টি মৎস্য সমবায় সমিতি অনুমোদন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

১৭টি সমবায় সমিতি বাতিলের দাবিতে জেলা প্রশাসক, জেলা সমবায় কর্মকর্তা ও রংপুর বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে অভিযোগ করা হয়েছে।

জানা গেছে, এফ আইডি কার্ড বিহীন ব্যক্তিদের মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির ৩৪২ জনকে সদস্য করেছে তৎকালীন সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। উপজেলার ১৭ টি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ সদস্য সংখ্যা ৩৪২ জন এর FID ধারী প্রকৃত মৎস্যজীবী না হলেও তাদেরকে মৎস্যজীবী হিসেবে প্রত্যয়ন পত্র দেওয়া হয়েছে।

তৎকালীন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার মো. হাকিবুর রহমান কর্তৃক ১৭টি সমিতিতে ৩৪২ জনকে প্রকৃত মৎস্যজীবী হিসেবে প্রত্যয়ন দেওয়া হয়। প্রত্যয়নে বলা হয় তাদের জেলে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু FID প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। উক্ত ব্যক্তিগণকে জেলে নিবন্ধন ফরম পূরণ করে উপজেলা কমিটিতে রেজুলেশনের মাধ্যমে অনুমোদন করা হয়। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করা হয়নি এবং অনলাইনে এন্ট্রি প্রদান করা হয়নি। ফলে FID নারী প্রকৃত মৎস্যজীবি সদস্য নন বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

এ বিষয়ে জেলা মৎস কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে গোবিন্দগঞ্জ কার্যালয়ের স্বারক নং ২০১, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং মুলে জেলা মৎস কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে যে FID ধারী প্রকৃত মৎস্যজীবি সদস্য নন তারা।

সমিতিগুলো হলো- কৃষ্ণচূড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ, প্রত্যাশা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড, সন্ধি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির লিঃ, চিয়ারগাঁও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ, প্রবাহ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ, জোনাকি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ, দুরন্ত মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ, সোনালী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ, জনতা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ, মেঘলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ, পলাশ মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ, করতোয়া মৎস্যজীবী সবাই সমিতি লিঃ, প্রত্যয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ, আশা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ, আলীগ্রাম উত্তরপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ, বন্ধন মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এবং দিগন্ত মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ।

উক্ত ১৭ টি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ এর অনুমোদন অবৈধ ও বিধিমালা অনুযায়ী সদস্য গ্রহণ করা হয়নি এবং নিয়ম বহির্ভূত ভাবে অনুমোদন দেওয়ায় বিভিন্ন মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক অভিযোগ দিলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

এ বিষয়ে জেলা সমবায় কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে মতামত প্রদানের জন্য উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা গোবিন্দগঞ্জের নিকট চিঠি প্রেরন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ গুলোতে কোন প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই অডিট কার্যক্রম করেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় সমিতির কর্মকর্তা জানান, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এর প্রত্যয়ন এবং উপজেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এর অনুমোদন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ফাইল প্রেরণ করা হয়। অনিয়ম করা হয়ে থাকলে তৎকালীন ক্ষমতাধরগণ করেছে। তিনি আরও বলেন, যদি কোন তথ্যের গোপনীয়তা এবং গড়মিল থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য
সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ফাইল প্রেরণ করা হবে।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, মৎস্যজীবি সদস্য ছাড়া কোন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ অনুমোদন দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। সমাবয় আইনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে কোন সদস্য মৎস্যজীবী না হইলে মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির রেজিস্ট্রেশন হওয়ার কোন সুযোগ নাই।

সচেতন মহলের দাবি, অবৈধ ১৭টি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির লিঃ এর অনুমোদন বাতিল করা না হলে। আইনী ব্যবস্থা সহ কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

আপনার মতামত লিখুন :