গোবিন্দগঞ্জে মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যর অভিযোগ

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৪:১৯ PM, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১

Spread the love

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দোঘড়িয়া দারুসুন্নাহ মজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও কৃষ্ণপুর ছয়ঘড়িয়া শাহ হান্নানিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, দোঘড়িয়া দারুসুন্নাহ মজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির কাউকে না জানিয়ে দপ্তরি, আয়া ও নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ দানের জন্য গোপনে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকু।

তিনি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, মাদ্রাসা সুপার মো. আজিজুল হক ও সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুর যোগসাজশে নিয়োগ বাণিজ্য প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছেন। ওই পদে একাধিক যোগ্যপ্রার্থী থাকা স্বত্বেও তারা আবেদন করার সুযোগ পাননি। সুপার ও সভাপতি তাদের মনোনীত ব্যক্তি দিয়ে আবেদন করান।

অভিযোগ উঠেছে, মাদ্রাসা সুপার মো. আজিজুল হক ও সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুর যোগসাজশে নিয়োগ বাণিজ্য প্রক্রিয়া করছেন। দপ্তরি পদে মামুন সরকার, আয়া পদে নাছিমা বেগম ও নৈশপ্রহরী পদে মিলন মন্ডলকে নিয়োগের জন্য চুড়ান্ত করা হয়। এ ঘটনায় দোঘড়িয়া দারুসুন্নাহ মজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার বিদ্যুৎসাহী সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন মন্ডল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।

অপরদিকে, কৃষ্ণপুর ছয়ঘড়িয়া শাহ হান্নানিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি ও সুপারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যর অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, সভাপতি শাহ মো. আবু হান্নান ও সুপার আব্দুল মান্নানের যোগসাজশে মোটা অংকে উৎকোচ গ্রহণ করে আয়া পদে রিনা বেগম ও নাইটগার্ড পদে বিপুল মিয়াকে নিয়োগ দেন। তাছাড়া নিরাপত্তা পদে লোক নিয়োগে নামে কামরুল ইসলামের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বছর পেরিয়ে গেলেও কামরুলকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি বলে জানা যায়। অদ্যবধি তাকে নিয়োগ না দিয়ে টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, যোগ্য লোকবল না নিয়ে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে সভাপতি ও সুপার তাদের মনোনীত ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে সুপার আব্দুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাদ্রাসার চালার টিন পরিবর্তন, ১৫ জোরা জানালা, ১৪ জোরা দরজার অর্ডার দেওয়া হয়েছে। সভাপতি প্রার্থীদের কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছেন তিনি আমাকে জানায়নি।

জানতে চাইলে সভাপতি শাহ মো. আবু হান্নান বলেন, নিয়োগের সময় আনুসাঙ্গিক খরচের জন্য আয়া পদে ৩০ হাজার ও নাইটগার্ড পদে ২৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। আর দরজা-জানালা বাবদ তাদের কাছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে দোঘড়িয়া দারুসুন্নাহ মজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ শুধু আপনাদের কাছে যায়। অভিযোগ শোনার পরই কি সংবাদ করতে হবে। একজন অভিযোগ করতেই পারে। অভিযোগের তদন্ত হোক।

তবে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে সাক্ষাত করতে চান তিনি। অপরদিকে, সুপার মো. আজিজুল হক বলেন, উক্ত বিষয়ে বিদ্যুৎসাহী সদস্য দেলোয়ার হোসেন মন্ডল আমাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে টাকা লেন-দেনের বিষয়ে সভাপতি সব জানেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ আলম পারভেজ বলেন, দোঘড়িয়া দারুসুন্নাহ মজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার বিষয়টি অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়োগ পরিক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। কৃষ্ণপুর ছয়ঘড়িয়া শাহ হান্নানিয়া দাখিল মাদ্রাসার বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী র্কমকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মনের বলেন, এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :