গোবিন্দগঞ্জে এক পদে দুজনকে নিয়োগ
গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাজিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে অর্থের বিনিময়ে দুইজনকে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও চাকরি দেওয়ার কথা বলে আরো একজনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, কাজিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগের জন্য ২০১৬ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরই প্রেক্ষিতে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর মো. আহসান উল্লাহ নামে এক যুবককে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। এরপর ১ অক্টোবরে তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
অভিযোগ উঠেছে, তৎকালীন প্রধান শিক্ষক সদরুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন ঠান্ডুর সঙ্গে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে আহসান উল্লাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক ৬ লাখ টাকা নগদ প্রদান করা হয়। শর্ত থাকে এমপিও হওয়ার পর বাকি টাকা তারা বুঝে নিবেন। এমপিও ভুক্ত হওয়ার পর আহসান উল্লাকে বিদ্যালয়ে আসতে বলেন তারা। কিন্তু এমপিও হওয়ার আগেই গোপনে গত ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর একই পদে সাইফুল ইসলাম নামে আরেক যুবককে ১৭ লাখ টাকার বিনিময়ে যোগদান করে নেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদরুল ইসলাম ও সভাপতি আনোয়ার হোসেন ঠান্ডু।
দুজনের কেউ এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় সম্প্রতি একই পদে দুইজনকে নিয়োগদানের বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর বেরিয়ে আসে ময়নুল নামেও এক যুবকের কাছ থেকে তারা ১৩ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি।
এ ব্যাপারে মো. আহসান উল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, আমাকে নিয়োগ প্রদানের সময় প্রধান শিক্ষক সদরুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন ঠান্ডু নগদ ৬ লাখ টাকা নেন। কিন্তু এমপিও ভুক্ত হওয়ার আগেই অজ্ঞাত কারণে বিদ্যালয়ে যেতে নিষেধ করেন। তবে বিষয়টি নিয়ে আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান তিনি।
অপর দিকে, একই পদে নিয়োগকারী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার নিয়োগের সময় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি ১৭ লাখ টাকা নিয়েছেন। আর এই পদে অন্য কাউকে নিয়োগ দিয়েছেন কিনা তা আমার জানা নেই। তবে আমি নিয়মিত স্কুলে যাই এবং হাজিরা খাতা সই করি।
একই পদে দুইজন ও অর্থের বিনিময়ে নিয়োগের বিষয়টি অস্বীকার করেন সদ্য অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সদরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি শুধু সাইফুল ইসলামকে নিয়োগ দিয়েছি। অন্য বিষয় নিয়ে সভাপতির সঙ্গে কথা বলেন।
জানতে চাইলে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন ঠান্ডু বলেন, প্রথমে আহসান উল্লাহকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। কিন্তু তিনি নিজ দ্বায়িত্বে এমপিও ভুক্তি করার কথা কিন্তু পরবর্তীতে যোগাযোগ না করায় সাইফুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। টাকা দেওয়ার বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান তিনি। তবে ময়নুল ইসলাম নামে যুবকের কাছ থেকে টাকা নেওয়া বিষয়টি স্বীকার করে তিনি জানান তার সমুদয় টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম পারভেজ বলেন, অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

