“গুজব ও কুতথ্য প্রতিরোধে যুবসমাজের করণীয়” শীর্ষক মতবিনিময় সভা
গাইবান্ধা প্রতিনিধি;
বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী, সাংস্কৃতি ও ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষে “গুজব ও কুতথ্য প্রতিরোধে যুবসমাজের করণীয়” শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ, গাইবান্ধার আয়োজনে অবলম্বন মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জনউদ্যোগ, গাইবান্ধার আহবায়ক ও উদীচী, গাইবান্ধা জেলা সংসদের সভাপতি অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম।
আলোচনা করেন, পরিবেশ আন্দোলন-গাইবান্ধার সভাপতি ওয়াজিউর রহমান রাফেল, অবলম্বনের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী, আইইডি’র সহযোগী সমন্বয়কারী সুবোধ এম বাস্কে, বাংলাদেশ রবিদাস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক খিলন রবিদাস, জনউদ্যোগ যুব কমিটির সদস্য সম্পা দেব, মনিকা মারান্ডি, মেরিজান মুর্মু, বাসন্তি সরেন, মানিক মার্ডি, জাকিতা আকতার ও সাব্বির মিয়া প্রমুখ।
বক্তরা বলেন, গুজব নামে ভিত্তিহীন প্রচার এতই শক্তিশালী, যা যে কোনো সময় যে কোনো দেশে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনে। বাংলাদেশের মানুষ প্রচন্ড আবেগ ও বিশ্বাস প্রবণ। শোনা কথা ও ধারণাপ্রসূত কথা শোনা ও বলায় তাদের আগ্রহ অনেক বেশি। আর এই অতি আগ্রহের কারণে গুজব ছড়ানো অনেক সহজ হয়। বিভিন্ন স্বার্থাণ্বেষী মহল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করতে চায়। বাংলাদেশে ছড়ানো এধরনের গুজবের সংখ্যা নেহায়েতই কম নয়। গুজবের ফলে
সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনা প্রায়শ সংঘঠিত হয়। বিশেষ করে হিন্দু ধর্মালম্বী দূর্গা পূজার সময় গুজব ভিত্তিক সংহিংসতার ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন পর হিন্দু ধর্মালম্বী সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গা পূজা শুরু হতে যাচ্ছে, সেখানে এ ধরণের ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসনসহ সকল সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠন, সচেতন ব্যক্তিদের কাজ করার আহবান জানান।
বক্তরা গুজব ও কুতথ্য প্রতিরোধে কিছু প্রযুক্তিগত পদক্ষেপ নেয়া যেমন প্রথমত: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যতগুলো অ্যাপস আছে যেমন, ফেসবুক,
হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইউটিউব, ইন বক্স মেসেজ যা থেকে কোনো ভুয়া খবর শেয়ার করা যায় তা বন্ধ করা। প্রযুক্তিবিদরা এই বিষয়ে কাজ করতে পারেন- যাতে কেউ কোনো গুজব অন্য কারো সাথে শেয়ার করতে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা লকড হয়ে যায়। বাংলাদেশে এরই মধ্যে সাইবার ক্রাইম ইউনিট এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে গুজব ঠেকানোর ব্যবস্থা করেছে।
দ্বিতীয়ত: গুজব বা ফেক নিউজ চিহ্নিত করার অ্যাপস সহজলভ্য করা। এখন ফেক নিউজ
চিহ্নিত করার জন্য অনেক অ্যাপস তৈরী হয়েছে যেগুলো স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে ইনস্টল করা গেলে গুজব ছড়ানো রোধ করা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
তৃতীয়ত: সচেতনতা বৃদ্ধি অর্থাৎ কোনটি গুজব আর কোন ধরণের পোস্ট শেয়ার করা যাবেনা–এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা। বিশেষ করে, ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা যেমন, হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড, লোকালয় বা জনসমাগমস্থানে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো দরকার।
চতুর্থত: সব শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে গুজব সম্পর্কিত পাঠ্যসূচী অর্ন্তভুক্ত করলে আগে থেকেই ছাত্রছাত্রীরা সচেতন হবে এবং গুজব ছড়ানো প্রতিরোধ করা সম্ভব বলেও অনেকে মনে করেন।

