গাইবান্ধায় জমি দখলের প্রতিবাদ করায় মামলা-হয়রানির অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার;
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে জমি দখলের প্রতিবাদ করায় মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগি ফজলুর রহমান সরকার। তিনি উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের সমসপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ১৯৯৬ সালে সমসপাড়া কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মহাপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর দুই দাগে ৩৩ শতাংশ জমি দলিল করে দেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক উক্ত দলিলকৃত জমিতে প্রতিষ্ঠান না করে আমার অনুপস্থিতিতে অন্য একটি জমিতে (অন্য দাগে) দুই কক্ষ বিশিষ্ট আধা-পাকা স্কুল ঘর নির্মাণ করে। পরবর্তীতে আমি বাধা দিলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর আলম তার পৈত্রিক ১৬ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে সম্পাদন করে দেন। বর্তমানে তার দেওয়া জমিতে বহুতল ভিত্তিকৃত ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। সেটিও বাড়ী দেখিয়ে নিজের নামে রেকর্ডভুক্ত করে নেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমি বিদ্যালয়ের বরাবরে এক দাগে ২৬ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে দেই। দলিলে আরো উল্লেখ আছে যে, উক্ত দুই দাগের মধ্যে ২৬ শতাংশ জমি যে দাগে আছে তার ওপর বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যালয়ের নামে ভবন নির্মানের বরাদ্দ আসলে প্রধান শিক্ষক জোর পূর্বক আমার দেয়া বিদ্যালয়ের নামে ৭ শতাংশের জায়গায় গোপনে ৩৩ শতাংশ রেকর্ডভুক্ত করে ভবন নির্মাণের পায়তারা করছে। এছাড়া আমার ওই জায়গার ওপরে লাগানো গাছ-পালা প্রধান শিক্ষক নুর আলমের নেতৃত্বে কেটে ফেলে। উক্ত ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। সেই সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাসুদ রানা, উপজেলা সহকারী ভূমিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন আদালত। এরই মধ্যে গত সোমবার বিরোধপূর্ণ জমি দখল করে খবন নির্মাণের উদ্বোধন করে ইউএনও। সেখানে জমির কাগজপত্র দেখাতে গেলে উক্ত জমির গাছকাটা মামলার বাদী ও তার বোনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয় এবং তাদের দেয়া অনৈতিক প্রস্তাবে রাজী না হলে ইউএনওর নির্দেশে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
এনিয়ে প্রধান শিক্ষক নূর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনেই সেখানে স্কুল ভবন নির্মাণ কাজ হচ্ছে। এ বিষয়ে আদালতে মামলা রয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আদালত মামলায় কি রায় দেন সেটা জেনে জমি বুঝে নিতে বলবেন তাদের।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম হোসেন বলেন, ওইখানকার ঘটনার বিষয়ে আমি সব জানি এবং তাদের গ্রেপ্তারের জন্য ইউএনওকে আমি নির্দেশ দিয়েছি।

