এসিল্যান্ড হত্যার বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ 

DBCNEWS24DBCNEWS24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৯:২৯ AM, ১২ জানুয়ারী ২০২২

Spread the love

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি;

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিদীয় মার্ডি হত্যার বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। অভিদীয় মার্ডি স্মৃতি রক্ষা কমিটির আয়োজনে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় উপজেলার কাটামোড় নামকস্থানে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুফল হেমব্রমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ গাইবান্ধার আহবায়ক জাহাঙ্গীর কবির তনু,, নওগাঁ ধামইরহাট হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাম জনম রবিদাস, ধামইরহাট পারগানা দিঘরি পরিষদ সভাপতি খোরশেদ পাহান, নিহত অভিদীয় মার্ডির বড় বোন ইমেন্দা মার্ডি, মানবাধিকার কর্মী সন্ধ্যা মালো, জোনাস হেমব্রম,,গাইবান্ধা ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কবাদী) মৃনাল কান্তি, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাস্কে, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শেখ, আদিবাসী নেতা বার্নাবাস টুডু ও টাটু টুডু প্রমুখ।

নিহত এসিল্যান্ড অভিদীয় মার্ডির বড় বোন ইমেন্দা মার্ডি বলেন, তার ছোট ভাই অভিদীয় মার্ডি ছিলেন ২৭তম বিসিএস ক্যাডার। এরপর তিনি একজন ১ম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হলো। সরকারের পক্ষ থেকে এই হত্যাকা-ে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচার করার কথা। অথচ তা না হওয়ায় বিচারের দাবী নিয়ে ৮ বছর ধরে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কোন বিচার পাচ্ছিনা। যদি অভিদীয় মার্ডিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা না হয়। তবে তার মোটরসাইকেলটি অক্ষত কেন ? তার শরীরে আঘাতের চিহৃ কেন ? এতে করেই প্রমাণিত হয় সুপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। কান্না জনিত কষ্ঠে তিনি আরো বলেন, ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত ওই সময় তারা গোবিন্দগঞ্জে একক আধিপত্য চালিয়েছে। যারা তাদের কথা শোনেনি তাদেরকেই প্রাণ দিতে হয়েছে। এদেরই একজন সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ। যার অনৈতিক কথা না শোনায় এসিল্যান্ড অভিদীয় মার্ডিকে জীবন দিতে হয়েছে। আমরা এ হত্যাকা-ের বিচার চাই। এসময় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, দিনে-দুপুরে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। যার বিচার হয়না। তিনি এই হত্যাকাণ্ডে সাথে জড়িত তারা বিচার বিভাগের চেয়েও শক্তিশালী। এ উপজেলায় একের পর এক হত্যাকা- ঘটলেও তা যেন দেখার কেউ নেই। দেশে প্রচলিত আইন থাকার পরও তা যথাযতভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছেনা। ফলে অপরাধীরা অপরাধ সংঘটিত করেই যাচ্ছে। বক্তারা অভিদীয় মার্ডি হত্যাকা-ে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার আহবানের পাশাপাশি আদিবাসী বাঙালির জমি ফেরত সহ ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বরে শ্যামল হেমব্রম, মঙ্গল মার্ডি ও রমেশ টুডুর হত্যাকারিদের দ্রুত বিচার করার দাবী জানান।
এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত এসিল্যান্ড অভিদীয় মার্ডির স্বরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন ও মোমবাতি প্রজ্বলন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কাটামোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

উল্লেখ্য, গত ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, গাইবান্ধার তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকসহ ১৩ জনকে আসামি করে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন নিহতের বড়ভাই ফাদার স্যামসন মার্ডি।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১১ জানুয়ারি অভিদীয় মার্ডি নিজ বাড়ী নওগাঁর ধামইরহাট থেকে মোটরসাইকেলযোগে গোবিন্দগঞ্জে কর্মস্থলে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে উপজেলার সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ইক্ষুখামারের কাটা-ফাসিতলা সড়কের মাঝামাঝি পৌঁছালে তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে দুর্বৃত্তরা। এরপর তাকে ইক্ষুখামারের ভেতরে নিয়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যার পর রাস্তায় ফেলে রেখে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়।

আপনার মতামত লিখুন :