উত্তরাঞ্চলে মরুকরণের শঙ্কা তিস্তার পানির নায্য হিস্যা দাবি
ডিবিসি প্রতিবেদক;
আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারতের আগ্রাসী তৎপরতায় বাংলাদেশে পানি প্রবাহ কমেছে। একই সঙ্গে ছিল। সরকারের ভ্রান্তনীতি ও দখল-দূষণের কারণে নদী মরেছে। ফলশ্রুতিতে দেশের উত্তরাঞ্চল মরুকরণের হুমকিতে পড়েছে।’
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) আয়োজিত এক বিভাগীয় সমাবেশে এসব কথা উঠে আসে। তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে রোববার দুপুরে বগুড়া শহরের সাতমাথায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা শহরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
সমাবেশে বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, চীন, নেপাল, ভুটান ও ভারত থেকে আসা নদীগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করে জালের মতো ছড়িয়ে গেছে। এই নদীগুলোই বাংলাদেশের প্রাণ প্রবাহ। ছড়িয়ে থাকা নদী ও পলি দিয়ে গড়া বাংলাদেশ আজ পানির অভাবে মরুকরণের হুমকির মুখে। এই অভাব প্রাকৃতিক কারণে নয়, মানুষের সৃষ্টি।’
কারণ হিসেবে বজলুর রশীদ বলেন, আন্তর্জাতিক সমস্ত আইন ও নীতি লঙ্ঘন করে ভারত ৫৪ টি নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে এক তরফা পানি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তাদের আগ্রাসী তৎপরতার ফলে পানির প্রবাহ কমে গিয়েছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে দেশের অভ্যন্তরে নদী দখল ও দূষণ।
বাসদের কেন্দ্রীয় সম্পাদক বলেন, এক সময় দেশে ১ হাজার ২০০টি নদী ছিল। সরকারের ভ্রান্তনীতি ও দখল-দূষণের কারণে নদী মরে গিয়ে এখন ২৩০ টিতে নেমে এসেছে। খরা মৌসুমে বেশিরভাগ নদীতেই পানি থাকে না। এক সময়ের প্রমত্তা অনেক নদীই এখন খাল-নালায় পরিণত হয়েছে।’
তিস্তা নদী নিয়ে কথা বলেন বাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জয়পুরহাট জেলা বাসদের আহবায়ক অধ্যক্ষ ওয়াজেদ পারভেজ। তিনি বলেন, দেশের চতুর্থ বৃহত্তম আন্তর্জাতিক নদী তিস্তার ভূগর্ভস্থ ও ভূ-উপরিস্থিত জলপ্রবাহ নিয়ে এর অববাহিকার পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার বর্গ কি.মি.। যার মধ্যে বাংলাদেশে ২০ হাজার বর্গ কি.মি. আর ভারতে ১০ হাজার বর্গ কি.মি।
ওয়াজেদ পারভেজ আরও বলেন, বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে প্রায় ৭০ কি.মি. উজানে গজলডোবায় বাঁধ দেয় ভারত। এ কারণে পানি পাচ্ছে না বাংলাদেশ। অথচ পত্র পত্রিকার মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি ভারত পানি প্রত্যাহার করতে নতুন আরও দুটি খাল খনন করছে।’
এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বাসদের আহ্বায়ক এ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু। এতে আরও বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জ জেলার আহবায়ক নব কুমার কর্মকার, নওগাঁ জেলার আহবায়ক জয়নাল আবেদীন মুকুল, রাজশাহী জেলার আহবায়ক আলফাজ হোসেন ও নাটোর জেলার সদস্য সচিব মোবারক আলীসহ প্রমুখ।’

