অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কেন বন্ধ হচ্ছে না এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের
নিজস্ব প্রতিবেদক;
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় করতোয়া (কাটাখালী) বাঙ্গালী নদী-সহ আবাদি জমি থেকে বালু উত্তোলন আজও বন্ধ হয়নি। দেখার কেউ নেই। নীরব প্রশাসন।
বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক নিয়মিত মামলা হলেও আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
দেশে মহামারির এ দুর্যোগময় সময়ে সবকিছু থমকে দাঁড়ালেও থেমে নেই বালু উত্তোলন ও বিপণন।
উপজেলায় বালুদস্যুদের বালু উত্তোলনে সৃষ্ট গভীর খাদে পড়ে প্রায় পাঁচজনকে দিতে হয়েছে প্রাণ। সম্প্রতি উত্তর ছয়ঘড়িয়া ঘাটে শুকনো নদীতে এমন বালুর গর্তে পড়ে প্রাণ দিতে হয়েছে এক নদীপাড়ের এক বৃদ্ধাকে। ১৬ জুলাই মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার প্রাণ হারালেন পৌরশহরের খলশী চাঁদপুর এলাকার করতোয়া নদীর সৃষ্ট গর্তে।
উপজেলার বালু দস্যুদের সাথে উপজেলা প্রশাসনের নীরবতায় এমন করে প্রাণ হারাতে থাকবে কিশোরী থেকে বয়ো-বৃদ্ধরা। দেশে আইন আছে, আছে সচেতন মহল। তবে কাদের দায় কতটা।
বিগত সাড়ে তিন বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক সহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটি। লিফটেল বিতরণ, একাধিক মানববন্ধন, নদী পাড়ের বাসিন্দাদের নিয়ে উঠান বৈঠক সবই করেছে এই নাগরিক কমিটি।
জেলা প্রশাসক, ইউএনও, এসিল্যান্ড, থানার ওসি থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
প্রশাসন শুধু দায়সারা বক্তব্য দিয়ে বলেন, আমরা বিষয়টি দেখছি। কিন্তু সেই দেখা আর আলোর মুখ দেখেনা।
প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব কর্মকাণ্ড চললেও, তারা খুঁজে পাননা এসব বালু স্পট ও জড়িতদের। তবে তাদের অর্জনও কম নয়। শুধু বালুর সাথে জড়িতদের অসংখ্য পয়েন্টে ও ভেঙ্গেছেন মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। লাখ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। পাশাপাশি স্থানীয় তহশিলদাদের দুটি মামলায় অর্ধশত চিহ্নিত বালু দস্যুদের নাম ঠিকানা উল্লেখ করে নিয়মিত মামলা হলেও; থানা প্রশাসন এসব আসামিদের খুঁজে পাচ্ছেন না। দৃশ্যমান নন আসামীরা। আজও বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন। চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব।
এতকিছুর পরও হয়তো অনেকই বলবেন এনিয়ে সাংবাদিকদের ভূমিকা কি। বলতে গেলে গোবিন্দগঞ্জে শতাধিক প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ার শত শত ব্যক্তি উপজেলার বালু উত্তোলন বন্ধে নানা উপকারী-অপকারী দিক তুলে ধরেছেন বহুবার। টিভিতে প্রচার হয়েছে সংবাদ আর অসংখ্য খবর ছাপা হয়েছে পত্রিকায়।
তবে কি বালুদস্যুরা প্রশাসনের চেয়ে ক্ষমতাবান? না, প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে এদের দ্রুত জব্দ করা সম্ভব। কিন্তু কেন প্রশাসন তা করছেন না?
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, ঠিক আছে আমি বিষয়টি দেখছি।
সচেতন মহলের দাবি, বালু স্পষ্টগুলো জব্দ এবং নিলামে বিক্রি করা হোক। তবেই এসব অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের জব্দ করা সম্ভব।

